অভিনেতা হাসান মাসুদ হাসপাতালে
গুরুতর অসুস্থ অভিনেতা হাসান মাসুদ । প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এই অভিনয়শিল্পী। সোমবার মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এই হাসান মাসুদকে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা পর তাকে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে হাসান মাসুদ
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার জানান-“হাসান মাসুদ ‘স্ট্রোক সিনড্রোম’ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরীক্ষা করে দেখা যায় উনি ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকও হয়েছে। আরও কিছু পরীক্ষা করতে হবে। উনাকে বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখনই পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে নিউরোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। এ ধরনের রোগীরা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকেন। এরপর পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে বলা যাবে।’
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শোবিজ অঙ্গনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সহকর্মী শিল্পীরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন।

অভিনয়ে ফিরতে চান না হাসান মাসুদ
হাসান মাসুদকে এক সময় একের পর এক দর্শকপ্রিয় নাটকে দেখা গেছে। কাজ করেছেন চলচ্চিত্রেও। তবে হঠাৎ করেই বিনোদন অঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন এই অভিনেতা। এখন আর পর্দায় তেমন দেখা যায় না। সম্প্রতি হানিয়া আমিরকে নিয়ে মন্তব্য করে এসেছেন আলোচনায়। এরপরই তিনি জানান, আর অভিনয়ে ফিরতে চান না। চাকরি করতে চান তিনি। অসুস্থ হওয়ার আগে দেশের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন হাসান মাসুদ।
চাকরি প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘আমি এখন একটা জব খুঁজছি। জব পেলেই আমি জবে ঢুকে যাব। সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক। সেটা সাংবাদিকতা হতে পারে, প্রশাসনিক কাজও হতে পারে। আমি চেষ্টা করছি। হারিয়ে যাব একেবারে।’

সেনাবাহিনী থেকে সাংবাদিকতা, তারপর অভিনয়
হাসান মাসুদ ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯২ সালে মাত্র সাত বছরের মাথায় ক্যাপ্টেন পদ থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিবিসির বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন।

সাংবাদিকতা ছাড়ার পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে তার পথচলা শুরু হয় । এরপর তিনি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সিনেমায় অভিনয় করেন। সেই সঙ্গে টেলিভিশন নাটকে কাজ শুরু করেন।
এই অভিনেতার বেশ কিছু নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘হাউসফুল’, ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘এফডিসি’, ‘বউ’, ‘খুনসুটি’, ‘গ্র্যাজুয়েট’, ‘রঙের দুনিয়া’, ‘আমাদের সংসার’, ‘গণি সাহেবের শেষ কিছুদিন’, ‘বাতাসের ঘর’ ও ‘প্রভাতী সবুজ সংঘ’।