২০২৩ সালে বিনোদন জগতের সাথে প্রশাসনের বেশ অম্লমধুর সম্পর্ক গিয়েছে। নানা কারণে বিভিন্ন শাখার তারকা হঠাৎই ‘নিমন্ত্রণ’ পেয়েছেন গোয়ে’ন্দা বিভাগ থেকে। পেটপুজো তো হয়েছেই, আবার পাশাপাশি হয়ে গেছে ‘সমস্যার সমাধান’।
বছরের মাঝামঝিতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের ভাতের নিমন্ত্রণ থেকেই সাধারণ মানুষের আলোচনায় চলে আসে এই ‘ভাতের নিমন্ত্রণ!’
প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল ইসলাম ওরফে হিরো আলম। ঐদিন দুই সহযোগীসহ ডিবি কার্যালয়ে দুপুরের খাবার খান তিনি। খাবারের পর আবার কিঞ্চিৎ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এই ভাইরাল ব্যক্তি। তবে সমস্যার সমাধান হয়েছে বলেও জানান।
নভেম্বরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার শিকার ‘কেন্দে দিয়েছি’ বলা শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করেন। সাথে ছিল তার পরিবারের সদস্য। তবে কোনও মা’মলা না করেই সেখানে থেকে বিদায় নেন তারা।
নভেম্বরেই সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য তানজিন তিশার উপর নাখোশ হন মিডিয়াসমাজ। তার অন্যতম কারণ ছিল, খোদ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে যাওয়া। এরপর আবার তিশা সেই অভিযোগ তুলে নিতে ডিবি অফিসে পৌঁছান। এতে করে সাংবাদিকদের সাথে দুরত্ব ঘুচবে বলে দাবী করেন কর্তৃপক্ষ। তবে ভাত খাবার ছবি সেখানে প্রকাশিত হয়নি।
বছরের শেষে অপু- বুবলী- মুন্নি এই তিন নারীর ব্যক্তিগত কলহের জেরে ফের ডিবি অফিসে হাজির হন অপু বিশ্বাস এবং কৌশিক হোসেন তাপস। তাদের ভাত খাওয়ার ছবি আবারও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। তাপসের অভিযোগের ভিত্তিতে অপু বিশ্বাসকে তলব করা হয়। পরে ১৯ ডিসেম্বর ডিবি কার্যালয়ে দুপুরের খাবার খান। ডিবি কার্যালয়ে সেসব বিষয় সমঝোতার পর সেখানে দুপুরের খাবার খান তারা। তাদের খাবারের মেন্যুতে ছিল ভাত, মাংস, মাছ, ডাল, লাল শাক, সবজি ও ভর্তা। অবশ্য আয়োজন শেষে অপু বিশ্বাস নিজেও অভিযোগপত্র জমা দিয়ে আসেন।
খাবারের এই তালিকা দেখেই হিরো আলম জানান যে, তাকে শুধু ভর্তা ভাজি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে। অপু বিশ্বাসের সময় আরও বেশি আইটেম ছিল।
ডিবি অফিসে যাতায়াত বা নিমন্ত্রণ নিয়ে রসালাপ থাকলেও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, “এটা রসবোধের প্রশ্ন। বাঙালি রসবোধ সম্পন্ন জাতি। বাংলা সাহিত্যে রসবোধ প্রয়োগ আমাদের মানসিক খোরাক জোগায়। আমি মনে করি রসবোধ প্রবণ একটি বিষয় হলো ভাত খাওয়ানো। আমরা আসলে কাউকে ডেকে এনে ভাত খাওয়াই না। কেউ যদি কাজের জন্য আমাদের কাছে আসেন, তার কাজটা করে দেওয়ার চেষ্টা করি। পাশাপাশি লাঞ্চ টাইম হলে লাঞ্চের অফার করি। তিনি যদি অফার গ্রহণ করেন তাহলে খেয়ে যান।”
বিনোদন জগত ছাড়া আরও অনেকেই এই অফিসে মধ্যাহ্নভোজ উপভোগ করেছেন এবং ২০২৩ সালে এসে আলোচনার শিখরে চলে এসেছে ‘ডিবি অফিসের নিমন্ত্রণনামা’।