ফাহিম বললেন, ‘আমি যদি কখনও হারায়া যাই কী করবা তুমি?’ অর্থীর উত্তর, ‘তুমি কী বিড়াল যে হারায়া যাবা?’ দুজনের মধ্যে দুষ্টুমি ছিল, ছিল রাগও। অর্থীর মাঝে মাঝেই মনে হতো ফাহিম তাদের সম্পর্ক নিয়ে সিরিয়াস না। একই কথা মনে হতো ফাহিমেরও। এ নিয়ে রাগারাগিও হতো দুজনের, হতো অভিমান।
ফাহিম–অর্থীর বোঝাপড়ার দিকটাও বেশ। এখানে অবশ্য অর্থীকেই এগিয়ে মনে হতে পারে। কারণ, তাকে ফাহিমকে বলতে শোনা যায়, ‘রিলেসনশিপ শুরু হয় ভালোবাসা দিয়ে, বাট টিকে থাকে রেসপনসিবিলিটি দিয়ে। একজন আরেকজনের দায়িত্ব নিতে হয়।’
জীবনে তো শুধু সম্পর্কই থাকে না, থাকে নানান অনুষঙ্গ। ফাহিমের ছিল সেগুলো। ছাত্র আন্দলনের সঙ্গেও কিছুটা জড়িত ছিল সে। এ নিয়ে অর্থীর ছিল উৎকণ্ঠা। বিষয়গুলো তাদের সম্পর্ককেও প্রভাবিত করত। এমন শত–সহস্র ঘটনায়–কথায় এগিয়ে চলছিল তাদের সময়গুলো। কিন্তু আরও অনেক জীবনের মতো ফাহিম–অর্থীর জীবনেও আসে নতুন মোড়।
কী সেই মোড়, কী সেই টুইস্ট, জানতে চাইলে দেখতে হবে ভিশন প্রেজেন্টস চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘ফরগেট মি নট’। ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে দেশের জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। ট্রেলারে যে টানাপোড়েনের আভাস পেয়েছিলেন দর্শকরা, সেই ঘটনাগুলো পরিস্কার হয়ে উঠছে তাদের কাছে।
দর্শকরা বুঝতে পারছেন মৃত্যু ও স্মৃতি এই গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার ইঙ্গিত ছিল ট্রেলারেও। এখানে এক মায়ের কণ্ঠে তার ছেলের জন্য বলতে শোনা যায়, ‘যে মা তাকে এত কষ্ট করে ছোট থেকে এত বড় করল, ছাদ থেকে লাফ দেয়ার আগে সে একবারও সেই মায়ের কথা ভাবল না?’ এই উদ্বেগের মধ্যে গল্পে হাজির হন মর্তুজা নামের যুবক। ট্রেলারের এক পর্যায়ে মর্তুজাকে পরিচয় করিয়ে দিতে অর্থী বলেন, ‘হি ইজ মাই ফিয়ন্সে (সে আমার বাগদত্তা)।’ এভাবে ডালপালা মেলেছে ‘ফরগেট মি নট’ ওয়েব ফিল্মের গল্প।
ফিল্মটি নির্মাণ করেছেন চরকির ‘ঊনলৌকিক’, ‘ক্যাফে ডিজায়ার’ খ্যাত সিরিজের পরিচালক রবিউল আলম রবি। ’ফরগেট মি নট’ নিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা সরল প্রেমের গল্প নিয়ে চরিত্র প্রধান একটা ফিল্ম বানানোর চিন্তা করছিলাম আমি, তখন ফারুকী ভাইয়ের কাছে এই গল্পের মূল আইডিয়াটা শুনি। ফারুকী ভাই এত সুন্দর করে বললেন, আমি প্রথমবার শুনেই অভিভূত হয়ে যাই। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুজন মানুষ হারিয়ে ফেলা ভালোবাসা আবারও খুঁজে নেয়ার অভিযাত্রায় জড়িয়ে পড়ে। উন্মোচিত হয় সম্পর্কের মাঝে লুকিয়ে থাকা কিছু অস্বস্তিকর ও অজানা সত্য। ’ফরগেট মি নট’ একইসঙ্গে স্মৃতিচারণ, অপরাধবোধ ও অনুধাবনের গল্প।’
ওয়েব ফিল্মটির অর্থী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী, ফাহিম চরিত্রে আছেন ইয়াশ রোহান, ইরফান সাজ্জাদ অভিনয় করেছেন মর্তুজা চরিত্রে, আর ফাহিমের মায়ের চরিত্রে আছেন বিজরী বরকতউল্লাহ। নিজের চরিত্র নিয়ে ইয়াশ রোহান বলেন, ‘ফাহিম তার পছন্দের কাজ নিয়ে খুব উৎসাহী। সে তার ভালোলাগাকে গুরুত্ব দিতে চায়। কিন্তু একইসঙ্গে চরিত্রটির উদাসীনতাও আছে। যার ফলে বন্ধু–স্বজন, মা, পছন্দের মানুষের সঙ্গে তার দুরত্ব তৈরী হয়। এই দুরত্ব তার জীবনের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং এর থেকে সৃষ্ট সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয় ফাহিমকে।’
ভিশন প্রেজেন্টস চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘ফরগেট মি নট’–এর ট্রেলার প্রকাশ পায় ২ সেপ্টেম্বর। তখন থেকেই ফিল্মটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করে আসিছেলন দর্শকরা। চরকির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দর্শকরা জানাচ্ছিলেন, ‘দেখার অপেক্ষায় আছি, ‘চরকির সিরিজ মানে নিঃসন্দেহে ভালো হবে আশা করা যায়’, ‘অপেক্ষার রইলাম, ভালো লেগেছে’। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মিল ঘটেছে বলে মনে করছেন দর্শকরা। মেহজাবীন ও ইয়াশ রোহানের চরিত্রের প্রেম, অভিমান, বিরহ ও অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ স্পর্শ করেছে দর্শকদের। একইসঙ্গে ওয়েব ফিল্মটির গল্পেও নতুনত্বের আলোচনা করছেন তারা।
’ফরগেট মি নট’ ওয়েব ফিল্মটি ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ প্রজেক্টের চতুর্থ ফিল্ম। এর আগে প্রজেক্টটির ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, ‘মনোগামী’ এবং ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ ওয়েব ফিল্মগুলো হয়েছে তুমুল জনপ্রিয়। ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ প্রজেক্ট থেকে ১২টি সিনেমা মুক্তি পাবে। সবগুলো সিনেমারই পৃষ্ঠপোষক ভিশন।