Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫

সুচিত্রা সেন: সৌন্দর্যে ম্যারিলিন মুনরো, নীরবতায় গ্রেটা গার্বো

আজ ৬ এপ্রিল বাংলা সিনেমার মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মদিন। সৌন্দর্যের তুলনায় কেউ কেউ তাকে মার্কিন অভিনেত্রী ম্যারিলিন মুনরোর সাথে তুলনা করেন আবার তার রহস্যময় নীরবতায় তুলনীয় হন হলিউডের নির্বাক ও ধ্রুপদী সময়কালের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা গ্রেটা গার্বোর সাথে।

সুচিত্রা সেন ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল তৎকালীন পূর্ববাংলার পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পড়াশোনা করেছিলেন পাবনা শহরেই। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী। সুচিত্রা সেনের প্রকৃত নাম রমা দাশগুপ্ত।   

১৯৪৭ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়। ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে যুক্ত হন সুচিত্রা সেন। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। পরের বছর উত্তম কুমারের বিপরীতে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন।

উত্তমকুমারের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের জুটি বাংলা ছবির ইতিহাসে সেরা জুটি। এই জুটি একসঙ্গে প্রায় ৩০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘সবার উপরে’, ‘পাপমোচন’, ‘শিল্পী’, ‘সাগরিকা’, ‘পথে হল দেরি’, ‘হারানো সুর’, ‘গৃহদাহ’, ‘প্রিয় বান্ধবী’ ইত্যাদি।

 ১৯৫৫ সালে প্রথম হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। সিনেমার নাম ‘দেবদাস’। এরপর অভিনয় করেন হিন্দি সিনেমা ‘আন্ধি’তে। এই সিনেমার জন্য ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি এবং তার স্বামী চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন।  

সুচিত্রা সেনই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে কোনো আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পান। ‘সাত পাকে বাঁধা’ সিনেমার জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭২সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পান সুচিত্রা সেন। এছাড়া ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা দেয়া হয় তাকে। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লী যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেয়া হয়নি। 

সুচিত্রা সেনের ‘আন্ধি’ গুজরাটে মুক্তির পর ২০ সপ্তাহ নিষিদ্ধ ছিল। কারণ, তিনি যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া থাকার কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গুজরাটের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয় ছবিটি।

চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়ানোর পর স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। এর পর থেকে বেশির ভাগ সময় রামকৃষ্ণ মিশনে কেটেছে তার। নির্জন ও নিভৃত জীবন যাপন করায় হলিউড কিংবদন্তি গ্রেটা গার্বোর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তার মিল খুঁজেছেন অনেকে।

অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায় ‘চৌধুরানী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে না পারায় কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন সুচিত্রা সেন। পরে চলচ্চিত্রটি নির্মাণই করেননি সত্যজিৎ। সুচিত্রা সেন অভিনীত বাংলা সিনেমার সংখ্যা ৫২, পাশাপাশি ৭টি হিন্দি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। বিখ্যাত এই মহানায়িকা ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে পরলোকগমন করেন।  

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

ফিলিস্তিনিদের জন্য বাংলাদেশী তারকাদের প্রার্থনা

আজ ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বে ইসরায়েল কর্তৃক গাজাবাসীর উপরে পরিচালিত গণহত্যার বিরুদ্ধে চলছে ধর্মঘট আন্দোলন। সেই…

মিডিয়া ট্রায়ালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললেন পরিমনি

গত ৪ এপ্রিল গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় জিডি করেছিলেন তার…

‘আমার স্ক্রিনটাইম খুবই কম কিন্তু গল্পে চরিত্রটার ইমপেক্ট রয়েছে’  

বেশ দাপট নিয়ে হলগুলোতে চলছে ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘দাগি’। উন্মুখ হয়ে সিনেমাটি দেখতে যাচ্ছে দর্শকরা।…
Exit mobile version