Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
সোমবার, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫

সিনেমা নির্মাতা আসামী, কারারক্ষী তার ভক্ত  

সুইডেনের ৪৮তম গোথেনবার্গ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এসে নিজের জেল অভিজ্ঞতা জানালেন আট বছর কারাদণ্ড পাওয়া সিনেমা নির্মাতা মোহাম্মদ রাসুলফ। সিনেমায় সরকারের সমালোচনা করায় এই কারাদন্ড দেয় ইরান সরকার। জেলে থাকাকালীন কয়েকজন ভক্ত বনে যান রাসুলফের। সেই ভক্তরা আবদার করেন, ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ সিনেমাটি রাসুলফের সঙ্গে বসে দেখতে চান তারা। সম্প্রতি গোথেনবার্গ চলচ্চিত্র উৎসবে সেসব  অভিজ্ঞতা্র কথাই জানিয়েছেন রাসুলফ।  ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ প্রদর্শিত হচ্ছে উৎসবে। অস্কারেও মনোনীত হয়েছে সিনেমাটি।     

কারাবন্দী সময়ের কথা স্মরণ করে রাসুলফ জানান, একদিন খোদ কারারক্ষী এসে বলেন, ‘দারুণ সিনেমা বানিয়েছেন, আপনাকে অভিবাদন’। সেই কারারক্ষী পরে জানান, রাসুলফের সঙ্গে বসে তার সিনেমা দেখতে চান!  

রাসুলফ বুঝতে পারেন, সেই কারারক্ষী কেবল কথার কথা বলছেন না, একসঙ্গে সিনেমা দেখার যাবতীয় পরিকল্পনাও সেরে ফেলেছেন।

‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ পোস্টার

জেলের ভক্তরা নাছোড়। জেলে সিনেমাটি দেখার নানা উপায় খুঁজতে থাকেন তারা। রাসুলফ বলেন, ‘একদিন দেখলাম গার্ডদের একজন ইউএসবি পোর্টে সিনেমাটির কপি নিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে একধরনের পাগলামি ছিল, নির্মাতার সঙ্গে বসে সিনেমা দেখার। তারাই নিশ্চিত করেন, কেউ বিষয়টা জানতে পারবে না। পরে মধ্যরাতে আমরা সিনেমাটি একসঙ্গে দেখেছি’।    

চারটি গল্প দিয়ে সাজানো ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ । সিনেমায় আছে ইরান সরকারের সমালোচনা, আছে স্বাধীনচেতা মানুষের কথা। ইরান সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মানুষদের ফাঁসি কার্যকর করেন, এমন এক ঘাতকের জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রথম পর্ব। সে পর্বের নামেই সিনেমার নাম ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’।  

এই সিনেমাই ২০২০ সালে বার্লিন উৎসবে স্বর্ণভালুক জেতে। ২০২২ সালে ইরানে বিক্ষোভ শুরু হলে সেই আন্দোলন উসকে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় রাসুলফকে। সে বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে মুক্তিও দেওয়া হয়। সরকার বিক্ষোভকারী মানুষের ওপর গুলি করে, অত্যাচার চালায়, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়াসহ সকল অনিয়মের তথ্য জোগাড় করতে থাকেন রাসুলফ।

‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ পোস্টার

সেই ইরান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক কর্মকর্তা ও তার দুই মেয়ের মানসিক দ্বন্দ্বের গল্প নিয়ে নতুন সিনেমা ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ বানিয়েছেন নির্মাতা। মেয়েরা বিক্ষোভে অংশ নিতে চায় কিন্তু বাধা দেয় বাবা। পরিবারে একসময় স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় বাবা। এই নিয়েই তৈরি করা হয় গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার জেতে ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’।   

ইরান সরকারের নানামুখি চাপে একসময় দেশ থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন রাসুলফ। কান উৎসবে হাজির হয়ে চমকে দেন এই দেশান্তরিত নির্মাতা। তার ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ ছবিটি অস্কারে পাঠিয়েছে জার্মানি।  

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next
Exit mobile version