ইংরেজি পঞ্জিকার পাতায় সালটি যখন ১৯৪৮, আর দিনটি ১৩ নভেম্বর, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে তখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিংবদন্তি হুমায়ূন আহমেদ। এই হিসেব অনুযায়ী আজ এই শব্দের জাদুকরের ৭৬তম জন্মদিন। ২০১২ সালে তার কলম থেমে গেলেও তার ম্যাজিকে এখন অবধি মন্ত্রমুগ্ধ গোটা বাঙালি জাতি।
বইয়ের পাতা থেকে শুরু করে টেলিভিশন ও রুপালি পর্দা, একটা সময় বাংলাদেশের বিনোদন মানেই ছিল এই জাদুকরের ছোঁয়া। তার হাত ধরেই আবারও উত্থান হয়েছিল ফিকশনের। সাধারণ মানুষের যে কাজগুলো নিয়ে ছিল ‘করবো করবো ভাবনা’, কিন্তু কখনো করা হয়ে ওঠেনি, হুমায়ূন তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মাধ্যমে সেই কাজগুলোই করে দেখিয়েছেন। এজন্যই হয়তোবা মানুষের সাথে তার কানেকশনটাও হয়েছে খুব দ্রুত।
কালজয়ী সব গল্প-উপন্যাস ও সিনেমা-নাটকের স্রষ্টা হুমায়ূনের ফিকশন নিয়ে যেমন ভক্তদের কৌতূহল, তারা ভালবাসে বলেই এই সাহিত্যিকের ব্যক্তিজীবন কিংবা শৈশব নিয়েও তাদের সমান কৌতূহল। এজন্যই হুমায়ূনের জন্মদিন উপলক্ষে চিত্রালীর আজকের আয়োজনে রয়েছে তার শৈশব জীবনের চর্চার আড়ালে রয়ে যাওয়া একটি অজানা গল্প।
পাকিস্তান জন্মের পরের বছর জন্মেছিলেন হুমায়ূন। তার জন্মের সময় চলছিল শীতকাল। শীতের এক রাতে ফয়জুর রহমান আহমেদ ও আয়েশা ফয়েজের কোলজুড়ে এসেছিলেন তাদের প্রথম সন্তান- হুমায়ূন। বাবা-মায়ের বড় সন্তান হওয়ায় তিনি ছিলেন সকলের মধ্যমণি। কিন্তু জানেন কি? ছেলে হওয়া সত্ত্বেও ছোটবেলায় তাকে পড়তে হয়েছে মেয়েদের ফ্রক!
হুমায়ূনের ফ্রক পড়ার কাহিনীটিও তার সাহিত্যের মতই কৌতূহলোদ্দীপক। তার পিতা ফয়জুরের ধারণা ছিল, তাদের ঘরে প্রথম সন্তান হবে মেয়ে। তাই অনাগত কন্যা সন্তানটির জন্য তিনি বানিয়ে রেখেছিলেন একগাদা ফ্রক। সাথে আরও বানিয়েছিলেন রূপার মল। বাবার শখ ছিল রূপার মল পায়ে দিয়ে মেয়েকে হাঁটতে দেখবেন ঝুম ঝুম শব্দ করে। পরে পুত্রসন্তান জন্ম নেওয়ায় এমন পরিকল্পনা ভেস্তে গেলেও হাল ছাড়েননি ফয়জুর। পুত্র হুমায়ূনকেই সাজিয়ে রাখতেন মেয়েদের সাজে।
ফ্রক পড়ানোর পাশাপাশি তার মাথার চুলও নাকি রাখা হতো লম্বা। লম্বা চুলে নানান রঙের ফিতা পরিয়ে বেণি করে দিতেন তার মা। হুমায়ূনের শৈশবের শুরুটা কাটে ঠিক এভাবেই।