২৯ মে, ২০২৪। আজ থেকে একাত্তর বছর আগে এই দিনেই বাংলার বিনোদন জগতকে সৃষ্টিকর্তা উপহার দিয়েছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে। তিনি হলেন হুমায়ুন ফরীদি।
১৯৫২ সালে জন্মেছিলেন কিংবদন্তি এ অভিনেতা। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- সব মাধ্যমেই সমানতালে দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন তিনি। ফরীদির অভিনয় গুণে বারবার মুগ্ধ হয়েছে দর্শকরা।
ফরীদির জন্ম গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়া গ্রামে। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। বাবার চাকরির সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরীদির ভর্তি হওয়া। এরপর মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে তার প্রবেশ করা।
১৯৭০ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর একই বছর ফরীদি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্গানিক কেমিস্ট্রি বিষয়ে স্নাতকে ভর্তি হলেও মুক্তিযুদ্ধের কারণে বিরতি আসে পড়ালেখায়। থেমে থাকেননি ফরীদি। খাতা-কলম বাক্সবন্দি করে তিনি হাতে তুলে নেন অস্ত্র। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস তিনি যুদ্ধ করে গেছেন বীরের মতও। ছিনিয়ে এনেছেন স্বাধীনতা।
ফরীদি মঞ্চনাটকে অভিষেক করেছিলেন ১৯৬৪ সালে। সেই বছর প্রথম কিশোরগঞ্জে মহল্লার মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন তিনি। পরবর্তীকালে টেলিভিশনে তার প্রথম কাজ ‘নিখোঁজ সংবাদ’ শিরোনামের নাটকে। কিংবদন্তি এ অভিনেতার প্রথম অভিনয় করা সিনেমার নাম ‘হুলিয়া’।
নায়কের চরিত্রেই হোক, খলনায়ক কিংবা হাসি-রসিকতায় ভরা কোনও চরিত্র, সব চরিত্রেই ফরীদি ছিলেন সাবলীল। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মাঝে রয়েছে ‘সন্ত্রাস’, ‘ভণ্ড’, ‘ব্যাচেলর’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘পালাবি কোথায়’ ইত্যাদি।
‘মাতৃত্ব’ সিনেমায় অভিনয় করে ২০০৪ সালে সেরা অভিনেতা শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান হুমায়ুন ফরীদি।
আজ থেকে ১২ বছর আগে, ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি। ফরীদি চলে গেলেও তার প্রতি দর্শকদের ভালোবাসা কমেনি এক বিন্দুও। মৃ’ত্যুর পরেও অভিনেতা যেন বারবার প্রমাণ করে যাচ্ছেন- শিল্পীর চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়..