ইরানের প্রখ্যাত নির্মাতা দারিউশ মেহেরজুই ও তার স্ত্রী ওয়াহিদেহ মোহাম্মদীফারের মৃত্যুর ঘটনায় ৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।১৫ অক্টোবর হত্যাকাণ্ডটির জন্য দুইজনকে গ্রেফতার করার কথা গণমাধ্যমে জানায় পুলিশের এক মুখপাত্র।
অপরদিকে ইরানের বিচার বিভাগের সূত্র দিয়ে ১৬ অক্টোবর প্রকাশ করা বিবিসির প্রকাশ করা এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডটির জন্য এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ইরানের আলবোর্জ প্রদেশের প্রধান বিচারপতি হোসেন ফাজেলি-হরিকান্দি’র ভাষ্যমতে, ১৪ অক্টোবর ইরানের স্থানীয় সময় রাত ৯ টায় মেয়ে মোনাকে কারাজের পশ্চিমে অবস্থিত নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান দারিউশ মেহেরজুই। দেড় ঘণ্টা পর বাড়িটিতে পৌঁছালে মা-বাবার ক্ষত-বিক্ষত লাশ দেখতে পান তিনি। দম্পতির ঘাড়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ওয়াহিদেহ মেহেরজুইয়ের মৃতদেহ দেখে এটা মনে হয়েছে তার প্রতি আততায়ীদের বেশি ক্ষোভ ছিল। কিছুদিন ধরে তিনি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে মৃত্যু হুমকি পাওয়ার কথাও অনবরত বলে আসছিলেন।
হত্যার কারণ এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। তবে তদন্তরত পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, দম্পতির ঘরের দরজা ভাঙা হয়নি। ঘরটিতে জোরপূর্বক ঢোকার কোন চিহ্নও লক্ষ করা যায়নি।
ইরানের চলচ্চিত্রে নতুন যুগের সূচনা করেন দারিউশ মেহেরজুই। ১৯৬৯ সালে নির্মিত ‘দ্য কাউ’ তাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেয়। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে দেশটি ত্যাগ করার আগে ‘মিস্টার গালিবল’ (১৯৭০), ‘দ্য সাইকেল’ (১৯৭৭)- এর মত চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন তিনি। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সে থাকার সময় দারিউশ ‘জার্নি টু দ্য ল্যান্ড অফ রিমবড’ (১৯৮৩) ডকুমেন্টারি তৈরি করেন। দেশে ফেরার পর ‘দ্য টেন্যান্টস’ (১৯৮৭) দিয়ে বক্স অফিস মাতান ইরানি এ নির্মাতা। ১৯৮৯ সালে নির্মিত তার চলচ্চিত্র ‘হামোউন’ ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় দর্শকমহলে। পরিচালকের ‘লেইলা’(১৯৯৭) এবং ‘দ্য পিয়ার ট্রি’ (১৯৯৮)ও ব্যাপক সমাদর পায়।
দারিউশ ১৯৯৮ সালে শিকাগো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে একটি সিলভার হুগো এবং ১৯৯৩ সালের সান সেবাস্তিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একটি গোল্ডেন সিশেল সহ অনেক পুরষ্কার পেয়েছিলেন।