আজ ২২শে শ্রাবণ। মহাকালের চেনা পথ ধরে প্রতিবছর বাইশে শ্রাবণ আসে। তিনি চলে গেছেন আজ ৮৩ বছর তবে বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে কবিগুরুর ঋণ। তাঁর সাহিত্য থেকে নির্মিত হয়েছে হিন্দি, বাংলা-নানা ভাষার সিনেমা। যা আজও বিশ্বব্যাপী রবীন্দ্র প্রেমীদের কাছে নন্দিত। আজকের দিনে কবিগুরুকে আরেকবার স্মরণ করতে দেখে নিতে পারেন তারর যে পাঁচ সিনেমা।
চোখের বালি
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য নিয়ে যত চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়, প্রশংসিত সিনেমা ‘চোখের বালি’! বিনোদিনী নামের এক বিধবার মানসিক অবস্থাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সিনেমার কাহিনি। দুই নারীর মধ্যকার বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক নিয়ে সিনেমার কাহিনি পায় নতুন মাত্রা। সর্বপ্রথম কবিগুরুর একই নামের উপন্যাস থেকে সিনেমা বানান নির্মাতা সতু সেন। ১৯৩৮ সালের সেই সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন সুপ্রভা মুখোপাধ্যায়, ইন্দিরা রায়, শান্তিলতা ঘোষ, রমা বন্দ্যোপাধ্যায়, হরেন মুখোপাধ্যায়, ছবি বিশ্বাস, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যসহ আরও অনেকে। এরপর ২০০৩ ‘চোখের বালি’ নির্মাণ করেছেন প্রয়াত নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ। এতে অভিনয় করেন–ঐশ্বরিয়া রাই, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, টোটা রায়চৌধুরী, লিলি চক্রবর্তী প্রমুখ।
চারুলতা
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘চারুলতা’ সিনেমাটি এখনও নির্মাতার ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন হিসেবে পরিগণিত হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্টনীড়’ উপন্যাস থেকে এক অবহেলিত এক গৃহবধূ চারুর তার দেবরের সাথে গড়ে ওঠা এক অব্যক্ত সম্পর্কের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘চারুলতা’ সিনেমাটি। ১৯৬৫ সালে সেরা চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের গোল্ডেন লোটাস পুরস্কারও জয় করে সিনেমাটি।
সুভা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুভা ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘সুভা’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০০৫ সালে। নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘সুভা’ ছবিতে জুটি বেধে অভিনয় করেছেন ঢালিউড মেগাস্টার শাকিব খান ও পূর্ণিমা।
‘সুভা’ চরিত্রে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ের ভূমিকায় পূর্ণিমার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল সর্বমহলে। শাকিব খানের অভিনয়ও নজর কেড়েছিল সমালোচকদের। ইমন সাহার সংগীত পরিচালনায় বাপ্পা মজুমদারে কণ্ঠে ‘চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে’ গানটিও ছিল চমৎকার।
কাবুলিওয়ালা
রবীন্দ্রনাথের লেখা ছোটগল্প অবলম্বনে ১৯৯৭ সালে তপন সিনহা পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করেন কাবুলিওয়ালা। আফগান কাবুলিওয়ালা রহমত ও বাঙালি কন্যা মিনির মিষ্টি সম্পর্কের এ গল্প অধরা থাকেনি বলিউডেও। চার বছর পর বিমল রায় হিন্দিতে তৈরি করেছিলেন কাবুলিওয়ালা। বিমল রায়ের ছবিতে কাবুলিওয়ালার চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন বলরাজ সাহানি। ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম কাল্ট ছবি হিসেবে পরিগণিত এটি। বাংলাদেশও থেমে থাকেনি। ২০০৬ সালে কাজী হায়াত নায়ক মান্না ও দীঘিকে নিয়ে নির্মাণ করেন কাবুলিওয়ালা। টালিউডেও মিঠুন চক্রবর্তীকে দেখা গেছে আইকোনিক ‘কাবুলিওয়ালা
ঘরে-বাইরে
১৯৮৪ সালে রবীন্দ্রনাথের ঘরে-বাইরে উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘ঘরে-বাইরে’। প্রেম ও ইংরেজবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের অনেক সূক্ষ্ম বিষয় উপন্যাসের মত খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলেন নির্মাতা। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মাননা পায় ‘ঘরে-বাইরে’।