Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪

বিদায় নিলেন কবি আসাদ চৌধুরী

আসাদ চৌধুরী

বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবি আসাদ চৌধুরী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

৫ অক্টোবর কানাডার টরন্টোতে অবস্থিত  আসোয়া লেকরিচ হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টার দিকে(স্থানীয় সময় দিবাগত রাত তিনটায়) ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।

তার পরিবারের বরাতে গণমাধ্যমে খবরটি নিশ্চিত করা  হয়েছে।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন আসাদ চৌধুরী। শ্বাসকষ্ট, কিডনিজনিত  বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন লেখক।  

 ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় সৈয়দা মাহমুদা বেগম ও মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী ওরফে ধনু মিয়ার ঘরে  জন্মগ্রহণ করেন আসাদ চৌধুরী।  

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য পড়াশোনা শেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১৯৬৪-১৯৭২ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন আসাদ চৌধুরী। পরবর্তীকালে ঢাকায় এসে একাধিক খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করার পাশাপাশি ১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ভয়েজ অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিছুকাল বাংলা একাডেমিতে  চাকরি করার পর এর পরিচালক পদ থেকে  অবসর নেন কবি।

১৯৭৫ সালে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তবক দেওয়া পান’ প্রকাশের পরপরই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যান তিনি। তার উল্লেখযোগ্য অন্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে- ‘বিত্ত নাই বেসাত নাই’, ‘প্রশ্ন নেই উত্তরে পাহাড়’, ‘জলের মধ্যে লেখাজোখা’, ‘যে পারে পারুক’, ‘মধ্য মাঠ থেকে মেঘের জুলুম পাখির জুলুম’, ‘দুঃখীরা গল্প করে’, ‘নদীও বিবস্ত্র হয়’, ‘বৃন্তির সংবাদে আমি কেউ নই’, ‘কিছু ফল আমি নিভিয়ে দিয়েছি’, ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’, প্রভৃতি।

 এছাড়াও তার লেখা শিশুসাহিত্যের মধ্যে রয়েছে – ‘রাজার নতুন জামা’, ‘রাজা বাদশার গল্প’, ‘গ্রাম বাংলার গল্প’, ‘ছোট্ট রাজপুত্র’, ‘সোনার খড়ম’, ‘ভিন দেশের মজার লোককাহিনী’, ‘তিন রসরাজের আড্ডা’, ‘কেশবতী রাজকন্যা’, ‘মুচি-জীবনী’।

তার লেখা ইতিহাসভিত্তিক গ্রন্থগুলো হচ্ছে- ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু (১৯৮৩)’, ‘রজনীকান্ত সেন’, ‘স্মৃতিসত্তায় যুগলবন্দী’, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’(১৯৮৩)।

তার লেখা কিছু উল্লেখযোগ্য অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বাড়ির কাছে’, ‘আরশিনগর: বাংলাদেশের উর্দু কবিতা’ এবং ‘প্যালেস্টাইন ও প্রতিবেশী দেশের প্রতিবাদী কবিতা’।

লেখালেখি ছড়াও আবৃত্তি এবং উপস্থাপনার জন্য অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন  আসাদ চৌধুরী।

কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও কবি আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৫), অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২), জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (২০০৬), বঙ্গবন্ধু সম্মাননা ১৪১৮, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি।

মৃত্যুর সময় কবি স্ত্রী শাহানা চৌধুরী, মেয়ে নুসরাত জাহান চৌধুরী শাঁওলী, দুই ছেলে আসিফ চৌধুরী ও জারিফ চৌধুরীসহ নাতি-নাতনিকে রেখে গেছেন। তার পরিবার  কানাডার টরন্টোতে বাস করেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য অঙ্গনে। 

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next
Exit mobile version