পবিত্র ঈদুল ফিতরে দেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে বেশ কিছু সিনেমা। প্রতিটি সিনেমাই তাদের নিজস্ব গল্প ও আঙ্গিকের জন্য নজর কেড়েছে দর্শকদের। সিনেমাগুলোর চমৎকার সব গল্প, দৃশ্যায়ন ও স্থান নির্বাচনের পেছনে আছে টাকা খরচ করার আলাদা আরেকটি গল্প। দাগি, জ্বীন-৩, চক্কর ৩০২ ও বরবাদের মতো দুর্দান্ত সিনেমাগুলোতে কি পরিমাণ বাজেট ছিলো তা একটু জেনে নেয়া যাক।
রমজান মাসের কিছুদিন আগেই শুরু হয় জ্বীন–৩ সিনেমার শুটিং। টানা কাজ করে কিছুদিন আগেই গান দিয়ে শেষ হয় সিনেমাটির শুটিং। মুক্তি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা ছিল। তবে সেসব উড়িয়ে দিলেন প্রযোজক ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ, ‘আমাদের সিনেমার কাজ শেষ। ইতিমধ্যে আমরা সিনেমাটি সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা দিয়েছি।’
বাজেট প্রসঙ্গে প্রযোজক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সবে সিনেমার কাজ শেষ করেছি। এখনো কত টাকা খরচ হয়েছে, হিসাব করতে পারিনি। আমাদের লোকেশন ফি, আর্টিস্ট পেমেন্ট, গাড়িভাড়া—সব মিলিয়ে এখনো খরচগুলো হাতে পাইনি’। তবে ধারণা করা হচ্ছে জ্বীন–৩ সিনেমার বাজেট দুই কোটি টাকার বেশি।
ঈদের অন্যতম আলোচিত সিনেমা দাগি। সিনেমাটি দিয়ে দুই বছর পর আবার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে আসছেন আফরান নিশো ও তমা মির্জা জুটি। সিনেমার অন্যতম প্রযোজক আলফা আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল সিনেমাটির বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, ‘পরিচালক কয়েকটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সিনেমার বাজেট তুলনামূলকভাবে কম। আসলে একজন পরিচালককে যত টাকাই দেওয়া হোক না কেন, সেটা সব সময়ই কম মনে হবে। এখন আমরা এটাও বলছি না, সিনেমার বাজেট তুফান সিনেমার মতো। দাগি সিনেমার জন্য যেটা দরকার, সেটাই খরচ করেছি। আমাদের বাজেট সাড়ে চার কোটি টাকা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা নেহাত কম বাজেট নয়। আমি বলব, অনেক বাজেট।’
এছাড়া ঈদে মুক্তি পাচ্ছে মোশাররফ করিম অভিনীত সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’। সিনেমার বাজেট নিয়ে নির্মাতা ও প্রযোজক শরাফ আহমেদ জীবন জানান, অনুদানের সিনেমার অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে একটা সহায়তামাত্র। তার দাবি, এই বাজেট দিয়ে বড়জোর প্রি-প্রোডাকশন হয়। সিনেমা বানানো সম্ভব হয় না। তার সিনেমায় শুধু শিল্পীদের সম্মানীই দিতে হয়েছে ৬০ লাখ টাকার বেশি।
জীবন বলেন, ‘আমার সিনেমার শুটিং–পরবর্তী সব কাজ হয়েছে দেশের বাইরে। কলাকুশলীরা সবাই অভিজ্ঞ। ভালো একটা দক্ষ টিম নিয়ে কাজ করা। আমরা তো বিজ্ঞাপনে কাজ করে অভ্যস্ত। সেই জায়গা থেকে কোনো ছাড় না দিয়ে নিজে ও আরও সহপ্রযোজক নিয়ে কাজটি শেষ করেছি’। শোনা যাচ্ছে, আপনার সিনেমার বাজেট দেড় কোটি টাকা? এমন প্রশ্ন শুনে জীবন বলেন, ‘বাজেট আমি বলব না, তবে এর অনেক বেশি।’ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত একজন জানান, সিনেমার বাজেট তিন কোটির বেশি।
এছাড়াও রয়েছে ঈদের সবচেয়ে বড় ধামাকা সিনেমা বরবাদ। শাকিব খান অভিনীত এই সিনেমার প্রযোজক শাহরিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের সিনেমার বাজেট নিয়ে একেকজন একেক রকম কথা বলছেন। সেটা আমরা দেখছি। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের সিনেমার পেছনে খরচ হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। সামনে প্রমোশনের জন্য আরও খরচ তো আছেই। সেটা আরও ছাড়িয়ে যাবে।’
ঈদের আরেক আলোচিত সিনেমা সিয়াম আহমেদের জংলি। সিনেমায় তার লুক বেশ প্রশংসিত হয়েছে। সিনেমাটি এখন সার্টিফিকেশন সনদের অপেক্ষায়। সিনেমাটির প্রযোজক অভি কথাচিত্রের কর্ণধার জাহিদ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের সিনেমার প্রাথমিক বাজেট ছিল দুই কোটি টাকা। এটাও দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশি। সেখান থেকে আরও বাড়াতে হয়েছে। কারণ, এখন নির্মাণ খরচ বেশি। যে কারণে সিনেমার সব খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই কোটি টাকা।’
সবগুলো সিনেমাই এখন সার্টিফিকেশন সনদের অপেক্ষায়। নানান জটিলতা কাটিয়ে সর্বশেষ সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা পড়েছে মেগাস্টার শাকিব খানের সিনেমা বরবাদ।