সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার তিন দশকের বেশি সময় ধরে সংগীত জগতে সক্রিয়। নিয়মিত গান প্রকাশের পাশাপাশি স্টেজ শো-তেও অংশ নিচ্ছেন তিনি। দীর্ঘদিন পর নতুন অ্যালবাম নিয়ে হাজির হয়েছেন বাপ্পা মজুমদার, যার নাম ‘ভার্টিকাল হরাইজন’। এই অ্যালবামটি সিডি আকারে প্রকাশিত হয়েছে এবং শনিবার তিনি নিজের চতুর্থ একক কনসার্টে গান গাইবেন।
বাপ্পা মজুমদার জানান, ‘ভার্টিকাল হরাইজন’ একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম, যেখানে মোট ১২টি গান রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি গান তার ক্যারিয়ারের প্রারম্ভিক সময়ের, বাকি গানগুলো নতুন হলেও অনেকটাই শ্রোতাদের সামনে এসেছে। একটি গান একেবারেই নতুন ও অপ্রকাশিত। সব গানের সংগীতায়োজন নতুনভাবে করা হয়েছে, তাই শ্রোতারা নতুন আঙ্গিকে গানগুলো উপভোগ করতে পারবেন। গানগুলোর কথা লিখেছেন মাস মাসুম, রাসেল ও’নীল, সানবিম, রানা, শাহান কবন্ধ, মেহেদী মহসীন, সোহেল আরমানসহ অনেকে। বাপ্পা নিজেও একটি গানের কথা লিখেছেন এবং সব গানের সুর-সংগীত করেছেন তিনি।
অ্যালবাম প্রকাশের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি তার ব্যক্তিগত এক তাগিদ। তিনি অনুভব করছিলেন যে মানুষের সঙ্গে গানের সম্পর্ক ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে। তাই এই অ্যালবামটি তৈরি করেছেন। সিডি আকারে প্রকাশের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে: প্রথমত, প্রযুক্তির এই যুগে গান আর পারসোনাল অনুভূতিতে পৌঁছাচ্ছে না, তাই সিডির মাধ্যমে সেই স্পর্শ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা; দ্বিতীয়ত, সিডিতে গানের স্টুডিও সাউন্ড ভালোভাবে পাওয়া যায়, যা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সম্ভব হয় না।
অ্যালবামের নাম ‘ভার্টিকাল হরাইজন’ কেন রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে বাপ্পা বলেন, ‘ভার্টিকাল’ মানে লম্বালম্বি এবং ‘হরাইজন্টাল’ মানে পাশাপাশি। এই নামটি সময়কে দুইভাবে ধরার প্রচেষ্টার প্রতিফলন।অ্যালবামটি অনলাইনেও আসবে, বিশেষ করে স্পটিফাইতে, তবে ইউটিউবে আসার সময় এখনো ঠিক হয়নি।
বিদেশে এখনও রেকর্ড প্লেয়ারের বাজার থাকলেও দেশে ক্যাসেট ও সিডির ব্যবহার প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাপ্পা মনে করেন, তাৎক্ষণিক ফ্রি মিউজিকের অভ্যাসের কারণে গান কেনার সংস্কৃতি হারিয়ে গেছে। এমনকি ব্ল্যাংক সিডিও পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, যা তার অ্যালবামের জন্য সংগ্রহ করতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
শনিবারের একক শো সম্পর্কে তিনি জানান, এটি তার চতুর্থ একক কনসার্ট, যা তেজগাঁওয়ের ইয়ামাহা ফ্ল্যাগশিপ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। প্র্যাকটিস চলছে এবং দর্শকদের জন্য একটি ট্র্যাক লিস্ট প্রস্তুত রয়েছে।
গানের কথার গুরুত্ব নিয়ে বাপ্পা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন গানের কথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি গান টিকে থাকার জন্য তার কথাগুলো সুন্দর ও অর্থবহ হওয়া প্রয়োজন। তিনি সবসময় মানসম্পন্ন ও সুন্দর কথার গান করতে পছন্দ করেন। যদিও চটুল গান জনপ্রিয় হতে পারে, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তার লক্ষ্য, তার গান যেন সময়ের সঙ্গে বেঁচে থাকে। ছোটবেলা থেকেই আবৃত্তি ও কবিতাচর্চার কারণে তিনি গানের কথার মর্যাদা ভালোভাবে বুঝতে পারেন।