সদ্যই পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে শ্রোতাপ্রিয় ব্যান্ড ‘জলের গান’-এর গায়ক তথা বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দের বাড়ি। এরপর অনেকের মনেই প্রশ্ন ওঠে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার উদ্দেশেই কি পুড়িয়ে দেয়া হলো বাড়িটি? প্রশ্নের উত্তর এলো ‘জলের গান’ থেকেই।
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তারিতভাবে লিখেছেন রাহুল আনন্দের পারিবারিক বন্ধু ফারহানা হামিদ। আর সেই লেখাটি জলের গান শেয়ার করেছে তাদের ভেরিফাইড সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে।
ফারহানা তার দীর্ঘ স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘রাহুল আনন্দের বাসা উদ্দেশ্য করে আ’গুন দেয়া, লুটপাট বা ভাংচুর করা হয়নি। আগুন দেয়া হয়েছে ৩২ এর “বর্তমান বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম ও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ” সেটুকুতে।’
তিনি যোগ করেন, ‘রাহুলদা একটা একতলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। একপাশে তাদের সংসার ,অন্য পাশে জলের গানের স্টুডিও(অনেকের ভিডিওতে এই বাসাটা নিয়ে ভুলভাল কথা বলতে দেখেছি আমি)। সেই বাড়িটা ব্যক্তিমালিকানায় ছিলো। ৩২ এর সেখানে আরো অনেক এমন বাসা আছে।রাহুলদা ও তার পরিবারের দুর্ভাগ্য এই মায়াময় বাসাটা নতুন মিউজিয়াম এর দেয়াল ঘেষে এবং সান্তুরের পিছনে ছিলো,তাই তার বাসাতেও আগুন দেয়া হয়।’
রাহুলদাকে উদ্দেশ্য করে আগুন দিলে তারা এই পরিবারকে এভাবে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ পেতেন না, বিষয়টি বোঝাতে ফারহানা আর লেখেন, ‘আর সুযোগ না দিলে সেই বাসা থেকে বের হওয়া অসম্ভব। রাহুলদার বাসায় আগুনের সাথে রাহুলদার ধর্ম, বর্ণ,জাত, সংস্কৃতি এর কোন সম্পর্ক নেই। তাই এমন গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। দেশের এই পরিস্থিতিতে যেকোনো গুজব ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। আমরা সচেতন হই।একটা সংসার ,একটা দলের বহুদিনের সাধনা, একজন বাচ্চার শৈশব এর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আর কারো কোন কিছু পুড়ে না যাক।’
এদিকে জলের গানের পেজ থেকে ফারহানার স্ট্যাটাস শেয়ার করা পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, ‘প্লিজ!!! লেখাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন। আমরাই গড়বো সাম্যের বাংলাদেশ। ভালোবাসি আমার সোনার বাংলা… আগামী সুন্দর হোক।।’
অর্থাৎ, সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘরে হামলা নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি হোক, তা চায় না জলের গান। তাই মানুষের মনে ভালোবাসা নেমে এসে যেন শুধরে যায় দেশ, সেই কামনাই তাদের।