Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫

দাঙ্গা বদলে দিলো নায়ক রাজ্জাকের জীবন

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সেরাদের সেরা নায়করাজ রাজ্জাকের ৮৩তম জন্মদিন আজ।

ষাটের দশকে ছোট্ট একটা চরিত্র দিয়ে অভিনয়ের শুরু। ১৯৫৮ সালে কলেজে পড়ার সময় অজিত ব্যানার্জির ‘রতন লাল বাঙালি’ ছবিতে পকেটমার চরিত্র দিয়ে অভিনয়ের শুরু রাজ্জাকের। তার তৃতীয় ছবি ‘শিলালিপি’। এখানেও চরিত্রটি ছিল নগণ্য। একটি গানের দৃশ্যে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করে সম্মানী পেয়েছিলেন ২০ টাকা।

বেহুলা ছবির পোস্টার

২০ টাকা সম্মানীর পর তিনি বুঝেছিলেন, টালিগঞ্জে সুবিধা করতে পারবেন না। ১৯৫৯ সালে অভিনয় শিখতে মুম্বাই যান। নায়ক হতে গিয়ে ভর্তি হন ফিল্মালয়ে। তখন ওখানে ক্লাস নিতেন দিলীপ কুমার, শশধর মুখার্জিরা। শুধু চঞ্চলতা আর অস্থিরতার কারণে এক বছরের সেই কোর্সের তাত্ত্বিক, পদ্ধতিগত শিক্ষায় রাজ্জাকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে।  

১৯৬২ সালে কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায় দেখা খায়রুন্নেসার সঙ্গে, যিনি রাজ্জাকের জীবনে ‘লক্ষ্মী’ হয়ে এসেছিলেন। ২০-এর যুবক রাজ্জাক তাকে বিয়েও করেন।  

রাজ্জাক ও কবরী | ছবি: ফেসবুক

৬০ এর দশকে দাঙ্গার কারণে স্ত্রী লক্ষ্মী ও শিশুপুত্র বাপ্পাকে নিয়ে ১৯৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছান রাজ্জাক। স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে ওঠেন ৮০ টাকা মাসিক ভাড়ায় কমলাপুরের একটি বাসায়।

একটা সময় ফার্মগেট এলাকায় থেকেছেন দুই সন্তান আর স্ত্রী লক্ষ্মীকে নিয়ে। তখন জীবিকা নির্বাহের জন্য টিভি নাটকে অভিনয় করতেন। অভিনয় করে সপ্তাহে পেতেন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। পয়সার অভাবে ফার্মগেট থেকে ডিআইটি টিভি কেন্দ্রে হেঁটে যাতায়াত করতেন তিনি।

তারপর ১৯৬৫ সালে, ‘আখেরি স্টেশন’ ছবিতে সহকারী স্টেশনমাস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ঢাকার ছবিতে ওটিই রাজ্জাকের প্রথম অভিনয়। যেমন ‘কার বউ’ ছবিতে অটোরিকশাচালক (বেবিট্যাক্সি ড্রাইভার), ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ পাড়ার ছেলে মিন্টু, ‘ডাকবাবু’–তে আদালতের কর্মচারী, ‘কাগজের নৌকা’য় বাঈজিবাড়ির মাতাল। একসময় পরিচয় হয় জহির রায়হানের সঙ্গে। তিনি রাজ্জাককে ‘বেহুলা’ ছবিতে নেন। ওই ছবি সাইনিং মানি হিসেবে ৫০০ টাকা নগদ পেয়েছিলেন। সেই টাকার কিছু অংশ বন্ধুবান্ধবকে মিষ্টি খাইয়ে শেষ করেন রাজ্জাক।

বউয়ের সাথে রাজ্জাক | ছবি: ফেসবুক

১৯৬৬ সালে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে লখিন্দরের চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি পেয়ে যান তুমুল জনপ্রিয়তা। মুক্তির পর ছবিটি দারুণ ব্যবসায়িক সফলতা পায়। সেই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের দর্শক গ্রহণ করে নেয় রাজ্জাককে। এই ছবি মুক্তির পর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে। ঢাকা পেল নতুন এক তারকা। ষাটের দশকের প্রবল রাজনৈতিক উত্তেজনা, লোকছবির উত্থান, পাকিস্তানি ও অন্যান্য ছবির ভিড়েও কখনো লোকগাথাভিত্তিক ছবিতে, কখনো সামাজিক, আবার কখনো গণ-আন্দোলনভিত্তিক ছবিতে সমান স্বাচ্ছন্দ্যে নায়ক চরিত্র করে গেছেন রাজ্জাক। রাজ্জাক হয়ে ওঠেন ঢাকার ছবির ‘নতুন উত্তমকুমার’।

১৯৬৯ সালে কাজী জহিরের ‘মধু মিলন’ ছবি দিয়ে রাজ্জাক-শাবানা জুটির শুরু। এরপর একে একে ‘অবুঝ মন’, ‘সাধু শয়তান’, ‘মাটির ঘর’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘চাঁপা ডাঙ্গার বউ’, ‘সখী তুমি কার’, ‘অমর প্রেম’, ‘রজনীগন্ধা’সহ অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।

১৯৬৪ থেকে আমৃত্যু এ দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি চলচ্চিত্র যত দিন থাকবে, রাজ্জাকের নাম জ্বলজ্বল করবে ততদিন।

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

ভৈরবে ‘কনসার্ট ফর জুলাই ফাইটার্স’  

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে ‘কনসার্ট ফর জুলাই ফাইটার্স’ শিরোনামে একটি কনসার্ট আয়োজন করা হচ্ছে । কনসার্টটিতে গান গাইবে…

মুক্তির আগেই কোটি টাকার ঘরে ‘স্কাই ফোর্স’

২৪ জানুয়ারি মুক্তির আশায় থাকা অক্ষয় কুমার ও বীর পাহাড়িয়া অভিনীত ‘স্কাই ফোর্স’ সিনেমা আয়ের হিসেবে এরই মধ্যে…

অপহরণের শিকার অভিনেত্রী নিঝুম

২১ জানুয়ারি রাজধানীতে দিনেদুপুরে অপহরণের মুখে পড়েছিলেন চিত্রনায়িকা নিঝুম রুবিনা। অল্পের জন্য বেঁচে বেড়িয়ে…
0
Share