টাঙ্গাইলে শেষ যাত্রায় রওনা দিলেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। ১৫ সেপ্টেম্বর জাপানে যাবার কথা ছিল তার।অকস্মাৎ পরপারের ডাকে সে পথটা ঘুরে গেল ভিন্ন দিকে।১৪ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে শেষকৃত্যের জন্য রওনা হচ্ছে তার মরদেহ।
স্নায়ুতন্ত্রের জটিল সমস্যার কারণে ১৫ সেপ্টেম্বর জাপানে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা চল্লিশ মিনিটের দিকে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক। হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা তানভীর ইসলাম জানান, ঘুমের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন ৬২ বছর বয়সী এ পরিচালক। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানার বরাতে গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়।
নির্মাতার মৃত্যুর একদিন আগে ১২ সেপ্টেম্বর ব্রেইন স্ট্রোক করে মৃত্যু হয় তার স্ত্রী প্রিয়া রহমানের ।
সোহানের শেষ ইচ্ছা অনুসারে টাঙ্গাইলে স্ত্রীর পাশেই তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।এর আগে গণমাধ্যমে এফডিসিতে তার মরদেহ নেওয়ার কথা শোনা গেলেও তার প্রয়াত স্ত্রীর শেষ ইচ্ছা অনুসারে তা আর হচ্ছে না।
তার বড় মেয়ে সৃষ্টি রহমান জানান, সোহানুর রহমান সোহানের অসুস্থতার সময়ে চলচ্চিত্র জগতের কেউ তার খোঁজখবর না রাখায় পরিচালকের স্ত্রী প্রয়াত প্রিয়া রহমান পরিচালকের মরদেহ এফডিসিতে নিতে বারণ করে যান আগেই। আর তাই সরাসরি টাঙ্গাইলে যাচ্ছে পরিচালকের মরদেহ।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন জানান,পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই সরাসরি টাঙ্গাইলে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
১৯৭৭ সালে নির্মাতা শিবলী সাদিকের সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন সোহানুর রহমান সোহান । এরপর একে একে তিনি শহীদুল হক খানের ‘কলমিলতা’ (১৯৮১), এজে মিন্টুর ‘অশান্তি’ (১৯৮৬) ও শিবলী সাদিকের ‘ভেজা চোখ’ (১৯৮৮) সিনেমাগুলোতেও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
তবে পরিচালক হিসেবে ১৯৮৮ সালে ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ সিনেমার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন সোহানুর রহমান সোহান। ১৯৯৩ সালে তার নির্মিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রটি পরিচালক হিসেবে তাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। তার নির্মিত অন্য চলচ্চিত্রগুলো হল ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘বেনাম বাদশাহ’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ ও ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’।
নন্দিত এ নির্মাতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, মহাসচিব শাহীন সুমন, প্রযোজক খোরশেদ আলমসহ আরও অনেকে।