ঢাকাই সিনেমার অন্যতম সফল নায়ক জসীম। যাকে কিনা এক সময়ের ‘একমাত্র অ্যাকশন হিরো’ বলেও আখ্যায়িত করা হতো। আজ থেকে ৭৩ বছর আগে আগস্ট মাসের ১৪ তারিখে জন্মেছিলেন এই নক্ষত্র। সালটি ছিল ১৯৫০।
মাত্র ৪৮ বছর বয়সেই বাংলার এই নক্ষত্রের বিদায় হয় চিরতরে। তবে আশি ও নব্বই দশকের দিকে রুপালি পর্দায় দাপটের সাথে তার অভিনয়ের নিদর্শন হয়ে আছে অবিস্মরণীয়। তার মৃত্যুর দুই যুগ পরেও ভক্তদের কাছে তার অভিনয়ের জাদু এখনো রয়েছে চিরনূতন।
কিন্তু জানেন কি, এই নায়ক যে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন খলনায়ক হয়ে?
হ্যাঁ, ভিলেন রুপেই পর্দায় আবির্ভাব হয় তার। নেগেটিভ ক্যারেক্টারে অভিনয় করেও তিনি ছিলেন অনবদ্য। পেয়েছিলেন সফলতা। পরবর্তীতে খলনায়ক থেকে তিনি বনে যান নায়ক।
ঢাকার নবাবগঞ্জে জন্ম নেওয়া জসীমের আসল নাম আবুল খায়ের জসীম উদ্দিন। তবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে তিনি পরিচিতি পান জসীম নামেই।
ঢালিউডের এই হিরো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে তিনি দুই নম্বর সেক্টরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তার নেতৃত্বে ছিলেন মেজর হায়দার।
চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ সিনেমার মাধ্যমে।
তিনি ছিলেন একজন অ্যাকশন ডিরেক্টরও। ১৯৭৩ সালে রংবাজ ছবিতে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন জসীম।
দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের অভিনয় করে তিনি বিশেষ পরিচিতি পান।
জসীমের নামে বিএফডিসিতে আছে একটি শুটিং ফ্লোর। তার মৃত্যুর পর সেই শুটিং ফ্লোরটির এই নামকরণ করা হয়।
জসীমকে নিয়ে আরেকটি কম চর্চিত তথ্য হলো, ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ সিনেমায় এসেছিলেন জসীমের হাত ধরে। ১৯৯৪ সালে রিয়াজ তার চাচাতো বোন ববিতার সাথে বিএফডিসিতে ঘুরতে আসেন। তখনই নায়ক জসীমের নজর কাড়তে সক্ষম হন তিনি। এরপরই জসীম কর্তৃক তাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলে ১৯৯৫ সালে জসীমের সাথে ‘বাংলার নায়ক’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় তার অভিষেক ঘটে।
পুরো ক্যারিয়ারে প্রায় ২০০ সিনেমায় অভিনয় করা কালজয়ী নায়ক জসীমের জন্মদিনে চিত্রালী মনে করিয়ে দিতে চায় তার উল্লেখ্যযোগ্য সিনেমাগুলোর কথা। যার মধ্যে রয়েছে ‘নাগ-নাগিনী’, ‘তুফান’, ‘বারুদ’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘স্বামী কেন আসামী’ সহ আরও অনেক নামকরা চলচ্চিত্র।
লেখা: রাহনামা হক