আসন্ন ১৩ এপ্রিল বাংলা বর্ষপূর্তি ও চৈত্রসংক্রান্তি। এই উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্টের আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এবারের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে ভিন্নতা থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
চৈত্রসংক্রান্তি অনুষ্ঠানে ঢাকার ব্যান্ডগুলোর পাশাপাশি গাইবে বেশ কিছু পাহাড়ি ব্যান্ড। বর্ষবরণেও থাকছে বর্ণিল আয়োজন। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানালেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন (উপসচিব), বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) পক্ষ থেকে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের সদস্য শেখ মনিরুল আলম টিপুসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে চৈত্রসংক্রান্তির কনসার্টে গাইবে ঢাকার ব্যান্ড মাইলস, ওয়ারফেজ, ভাইকিংস, এভয়েড রাফা, দলছুট, লালন ও সুফি। থাকবে গারো ব্যান্ড এফ মাইনর, মারমা ব্যান্ড লালং, ত্রিপুরা ব্যান্ড ইমাং, খাসিয়া ব্যান্ড ইউনিটি ও চাকমা ব্যান্ড ইনভোকেশন।
কনসার্টের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো বর্ষবরণের শোভাযাত্রায় অংশ নেবে বামবা। বিশ্বব্যাপী শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সকল মিউজিশিয়ান একসঙ্গে গাইবে ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’।
বামবার পক্ষে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের প্রধান মনিরুল আলম টিপু বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্ষবরণ হয়, চৈত্রসংক্রান্তি হয়। এই অনুষ্ঠানগুলোতে সাধারণত ব্যান্ড মিউজিশিয়ানরা অংশ নেন না। এবার প্রথমবারের মতো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি আমাদের ব্যান্ড মিউজিশিয়ানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাই অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
এ বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এ বছর পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস অংশগ্রহণ করবেন। পৃথিবীর শান্তি কামনায়, বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্মিলিতভাবে একটি গান গাইবেন তারা। এই শোভাযাত্রায় ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশের সকল মিউজিশিয়ানদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। ৫৪ বছরের ইতিহাসে শিল্পকলা একাডেমিতে চাঁদরাতে কোনো অনুষ্ঠান হয়নি, এবার হয়েছে। আগামী বছর সারা দেশে সব শিল্পকলায় এই অনুষ্ঠান হবে। আবার চৈত্রসংক্রান্তি ও নববর্ষের দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে এর পূর্বে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এবার করা হয়েছে। কারণ উৎসবটা বাংলাদেশের, তাই সবার অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে। একই সঙ্গে এই নববর্ষে আমাদেরকে ফিলিস্তিনে যে ঘটনা ঘটছে তার প্রতিবাদ করে ফিলিস্তিনিদের যেন শান্তি ফিরে আসে এই কামনাটা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ১৩ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে ব্যান্ড শো, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল হবে শোভাযাত্রা, বিকেলে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শো এবং ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে বর্নিল আয়োজন।