গত হলেন খ্যাতনামা গজ়ল গায়ক পঙ্কজ উদাস। ৭২ বছর বয়সে চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন তিনি। তার প্রয়াণের খবর সুনিশ্চিত করেছেন শিল্পীর মেয়ে নায়াব উদাস।
নায়াব তার অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের জানাচ্ছি, পদ্মশ্রী পঙ্কজ উদাস ২০২৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন।’
পঙ্কজ উদাসের মৃ”ত্যু নিয়ে জানা গেছে, মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেলা ১১টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে গায়ক বার্ধক্যজনিত নানা ধরনের অসুস্থতায় ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানে যেতেন না পঙ্কজ। পরবর্তীতে তার শারীরিক জটিলতা গত কয়েকদিন ধরে আরও বেড়ে যায় এবং একেবারেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শেষমেশ ২৬ ফেব্রুয়ারি চিরতরে থেমে গেলো গায়কের সুরেলা কন্ঠ।
সংগীতপ্রেমী এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল, যার মন ছুঁয়ে যায়নি পঙ্কজ উদাসের কন্ঠ। ‘চিঠঠি আয়ি হ্যায়’ গানের মাধ্যমে দর্শকদের মনে রাতারাতি জায়গা করে নিতে সক্ষম হন তিনি। এরপর থেকে তার প্রকাশিত একেকটি গজলের অ্যালবাম তাকে পরিণত করে উপমহাদেশের অন্যতম গায়ক হিসেবে। পঙ্কজের প্রকাশিত অ্যালবাম গুলোর পাশাপাশি তার লাইভ কনসার্টেরও রয়েছে আলাদা ফ্যানবেজ।
১৯৫১ সালের ১৭ মে নন্দিত এই শিল্পী জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাজকোটের কাছে অবস্থিত চারখাদি নামের একটি ছোট্ট শহরে। তিনি জমিদার পরিবারের ছেলে। বাবা কেশুভাই উদাস ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। চাকরি করলেও তার আগ্রহ ছিল মিউজিকে। এই আগ্রহ থেকেই দিলরুবা বাজাতেন তিনি। বাবার সুবাদে ছোট থেকেই সংগীতের পরিবেশে বড় হতে থাকেন পঙ্কজ। পরবর্তীকালে তার বাবাই তাকে ভর্তি করিয়ে দেন রাজকোটের সংগীত একাডেমিতে। এরপর ১৯৮০ সালে ‘আহাত’ শীর্ষক গজল অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমে তিনি তার সংগীত দুনিয়ায় যাত্রা শুরু করেন।
পঙ্কজ উদাসের গাওয়া গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘চান্দি জ্যায়সা রং’, ‘না কাজরে কি ধার’, ‘দিওয়ারো সে মিলকর রোনা’, ‘আহিস্তা’, ‘থোড়ি থোড়ি প্যায়ার করো’ ইত্যাদি। দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বলিউডে একের পর এক হিট অ্যালবাম উপহার দিয়েছেন তিনি। তাইতো পৃথিবীকে চিরবিদায় জানালেও সংগীতপ্রেমীদের মন থেকে ‘গজল কিং’-এর বিদায় হবে না কোনোদিনও।
২৭ ফেব্রুয়ারি পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্ত পঙ্কজ উদাসের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।