‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ র্যাপ গান গেয়ে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন র্যাপার আলী হাসান। এরপর ভাইরাল হয়েছে তার আরও কয়েকটি গান। তার জনপ্রিয়তার মাত্রা আরও উপরে ওঠে কোক স্টুডিও বাংলার ‘মা লো মা’ গানে কণ্ঠ দিয়ে। তবে এবার তরুণ এই র্যাপার গান নয়, বরং আলোচনায় এলেন অন্য এক কারণে!
সম্প্রতি আলীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যে গান গেয়ে গায়কের পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে, সেই গান নিয়েই করা মন্তব্যে সমালোচিত তিনি।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে আলী হাসান বলেন, ‘গান–বাজনার টাকা হারাম’। তাই এ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বাজার করেন না তিনি। তবে বসবাসের জন্য তৈরি করছেন বহুতল বিশিষ্ট বাড়ি।
আলীর ভাষ্যমতে,
গান বাজনার টাকা হারাম। এতে কোনো হাদিস চলব না, যেটা হারাম সেটা হারামই। আমার অটো বিজনেসের টাকা হালাল। সংগীত থেকে আয় হারাম। তাই বিজনেসের টাকায় (হালাল আয়ে) বাজার সদাই করি, আর মিডিয়ার টাকায় (হারাম আয়ে) বাড়ি তৈরি করি। এভাবেই চলতেছি।
তার এই মন্তব্য মুহূর্তের মাঝেই ছড়িয়ে পড়েছে অন্তর্জালে। আলীর মন্তব্যের অংশটুকু কেটে ফেসবুকে শেয়ার করে নেটিজেনরা তাকে তুলোধুনো করছেন।
এদিকে নেটিজেনদের রোষানলে পড়ে আলী হাসান দাবি করেন, তার বক্তব্য না বুঝেই সমালোচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছি, গানে যে বাদ্য-বাজনা ব্যবহার হয়, তা আমাদের ধর্মে হারাম। সেই কাজগুলো ছেড়ে দিতে চাই। এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকার থেকে দুই–তিন মিনিট কেটে ছেড়ে দেওয়ায় আমার কথাটি অনেকে বুঝতে পারছেন না। পুরো ইন্টারভিউ দেখলে হয়তো আমার মনের কথাটা বুঝতে পারবেন সবাই। ছোট ছোট ক্লিপস দেখে কাউকে বিচার করবেন না। যদি আমার অসৎ উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে এ বিষয়ে কথা বলতাম না।’
সমালোচনার বিষয়ে গায়ক বলেন, ‘অনেকেই ট্রোল করছে। কিন্তু আমার কাছে এসব কোনো বিষয় না। মানুষ মাত্রই ভুল। আমার কথায়, আচরণে, চলাফেরায় ভুল হতেই পারে। হয়তো আমার মনের কথাটি গুছিয়ে বলতে পারিনি। হালাল খাই, হারামে থাকি—বিষয়টি এ রকম নয়। দুটি মিলিয়েই চলছি। কোক স্টুডিও বাংলার সঙ্গে কাজ করার পরেও অনেকে সমালোচনা করেছেন। আমি কিন্তু বিষয়টাকে কাজ হিসেবে দেখেছি। অনেকে বুঝেছেন, অনেকে বোঝেননি। তবে আমার আয়ের পথটা ভালোর দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
সবশেষে ধীরে ধীরে গান থেকে সরে আসার কথা জানান আলী হাসান। তবে গান ছেড়ে দিলেও মিডিয়াতে থাকবেন তিনি। বেশ কয়েকটি গানের কাজ হাতে আছে। সেগুলো শেষ হলে ভবিষ্যতে ইসলামি সংগীত লেখায় মনোযোগ দেয়ার ইচ্ছা আছে তার। আলী হাসানের শেষ গানের শিরোনাম ‘ইসলাম’ দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন এ গায়ক। এই গানটি তৈরি হওয়ার পর আর গান লিখবেন না তিনি।