প্রায় ২৩ বছর আগে মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলার একমাত্র আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভিকে খালাস দিয়েছে আদালত। আজ ১৪ জানুয়ারি, এই রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহীনুর আক্তার।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী আমিনুর রহমান আমিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ মামলার একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাই, আসামি অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। আর আজ রায় ঘোষণার সময় ভিকটিমের পরিবারের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।’
২০০২ সালের ১০ নভেম্বর, বুড়িগঙ্গা নদীর চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর নিচ থেকে তিন্নির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেইদিনেই কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় এবং ওই থানার উপপরিদর্শক শফিউদ্দিন নিহত তিন্নির প্রাক্তন স্বামী শাফাকাত আহমেদ পিয়াল, স্বপন গাজী, গাজী শরিফুল্লাহ তপন, শফিকুল ইসলাম জুয়েল এবং সোমনাথ সাহা বাপ্পীকে গ্রেপ্তার করেন। এর ঠিক ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দাখিল করা সেই অভিযোগ পত্রে লেখা ছিল, অভি ওই হত্যাকাণ্ডের আগে স্বামী পিয়ালের সঙ্গে তিন্নির দাম্পত্য সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে তাকে ‘ফাঁদে ফেলে অনৈতিক সম্পর্ক’ গড়ে তোলেন।
কিন্তু সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত অভি তাকে কখনোই স্ত্রীর মর্যাদা দেননি, বরং বিয়ের জন্য তিন্নি চাপ দিলে ‘পরিকল্পিতভাবে’ তাকে খুন করে লাশ চীন-মৈত্রী সেতুর নিচে ফেলে রাখেন।
কিন্তু সাবেক ছাত্রনেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। এমনকি ২০০৭ সালে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করেও অভিকে দেশে ফেরানো যায়নি। ২০১০ সালের ১৪ জুলাই পলাতক অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ।
২০২৪ সালের ২২ আগস্ট এই আদালতে (ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) বদলি হয়ে আসে। তারপর ২৫ আগস্ট যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য ১৪ অক্টোবর ধার্য্য করা হয়। কিন্তু সেদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় এ বছর ১৪ জানুয়ারি ধার্য্য করা হয়। সে অনুযায়ী আজ রায় দেওয়া হল।