আজ ১৮ মার্চ চাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছরের এই দিনে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
চিরতরে চলে যাওয়ার আগে খালিদ বাংলা গান ও তার শ্রোতাদের দিয়ে গেছেন একাধিক কালজয়ী গান, যার মধ্যে রয়েছে ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, এবং ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’।
খালিদ দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন এবং একাধিকবার চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তার হৃদযন্ত্রে একটি স্টেন্টও বসানো ছিল। গত বছর, মৃত্যুর দিন সন্ধ্যায় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন, তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।
খালিদের মৃত্যুর পর শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল এবং মাইলস ব্যান্ডের শিল্পী শাফিন আহমেদও মারা যান। এই নিয়ে শোক প্রকাশ করেছিলেন অবসকিউর ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সাইদ হাসান টিপু।
১৯৬৫ সালের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা খালিদ ১৯৮১ সালে ফ্রিজিং পয়েন্ট নামের একটি ব্যান্ডে যোগ দেন, যা ১৯৮৩ সালে নাম বদলে ‘চাইম’ হয়। চাইমের প্রথম অ্যালবাম দিয়ে তার সংগীত যাত্রা শুরু হয়।
‘বেকারত্ব’, নাতি–খাতি বেলা গেল’, ‘তুমি জানো নারে প্রিয়’, ‘কীর্তনখোলা নদীতে আমার’, ‘এক ঘরেতে বসত কইরা’, ‘ওই চোখ’, ‘প্রেম’, ‘সাতখানি মন বেজেছি আমরা’, ‘আমার জন্য রেখো’—এমন অনেক গান শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০৫ সালে ‘কীর্তনখোলা’ অ্যালবামের মাধ্যমে চাইমের শেষ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।
এছাড়া খালিদ একক শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং তার প্রথম অ্যালবাম ‘এক টুকরো চাঁদ’ প্রকাশ পায়, যার ‘মাক্ষীগিরা’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। পাশাপাশি বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে তার ‘আবার দেখা হবে’, ‘কোনো কারণেই’, ‘আকাশ নীলা’ প্রভৃতি গানও শ্রোতাদের মন ছুঁয়েছে।
খালিদের অধিকাংশ জনপ্রিয় গানের গীতিকার এবং সুরকার ছিলেন প্রিন্স মাহমুদ। খালিদ ও প্রিন্সের যুগলবন্দী বাংলা গানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে একের পর এক হৃদয়ছোঁয়া সৃষ্টি। ‘আবার দেখা হবে’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’—এমন বহু গান বাংলা গানের অমূল্য রত্ন হয়ে আছে।
২০০৬ সালে মিক্সড অ্যালবাম ‘দেবী’ থেকে ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০০৮ সালে তার একক অ্যালবাম ‘ঘুমাও’ প্রকাশিত হয়, যা তার ক্যারিয়ারের একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। তবে এর পর থেকে খালিদ সংগীতের জগত থেকে কিছুটা সরে গিয়ে তার পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন। মৃত্যুদিনে খালিদের প্রতি শ্রদ্ধা।