আজ কিংবদন্তি শিল্পী কবীর সুমনের জন্মদিন। তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। তিনি ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ উড়িষ্যার কটকে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সুধীন্দ্রনাথ এবং মা উমা চট্টোপাধ্যায়। কবীর সুমনের সাথে জড়িয়ে আছে নানা পেশার অভিধা। তিনি একাধারে গায়ক, গীতিকার, বেতার সাংবাদিক, অভিনেতা, গদ্যকার, সংসদ সদস্য এবং সংগ্রামী।
কবীর সুমন খুব অল্প বয়সেই বাবার তত্ত্বাবধানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। আচার্য কালীপদ দাস ও চিন্ময় লাহিড়ী তাকে খেয়াল শিখিয়েছিলেন।
২০০০ সালে বাংলাদেশের কিংবদন্তি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন কবীর সুমন। সে সময় ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম রাখেন কবীর সুমন। মূলত আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীতই বেশি গেয়েছেন এই গুণী শিল্পী।
শিল্পীজীবনের প্রথম পর্যায়ে সুমন ‘নাগরিক’ নামের কলকাতার একটি ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সুমন নিজেই একটা ব্যান্ড খোলেন, নাম দিলেন ‘সুমন দ্য ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’। সুমনই সুমনের ব্যান্ডের একজন এবং একমাত্র সদস্য।
তার কনসার্টে অন্য কোনো যন্ত্রশিল্পীর প্রয়োজন পড়ে না। একই সঙ্গে গিটার, হারমোনিকা, কিবোর্ড বাজিয়ে নিজেই নিজের গান করেন।
১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। তার স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা পনেরো। সংগীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয় ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটগল্পের রচয়িতা এবং হারবার্ট ও চতুরঙ্গ প্রভৃতি মননশীল ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের রূপদানকারী।
প্রথম জীবনে রেডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন ডয়েচে ভেলে-তে, কাজ করেছেন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে। কেরানি ছিলেন ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায়। বন্ধু অঞ্জন দত্তের অনুরোধে অভিনয় করেছেন ‘রঞ্জনা আমি আর আসবো না’সহ কিছু ভারতীয় বাংলা সিনেমায়। সৃজিতের ‘জাতিস্মর’ সিনেমায়ও মিলেছে সুমনের উপস্থিতি।
কবীর সুমন অসংখ্য গানের স্রষ্টা। তিনি ‘দুনিয়াটা, গানওয়ালা, তোমাকে চাই, তুমি ছিলে, হাল ছেড়ো না বন্ধু, অভিবাদন, খোদার কসম জান, জাতিস্মর, ফেলানী খাতুনসহ অসংখ্য গানের স্রষ্টা এই কিংবদন্তী শিল্পী।