“যে শিশুটি মৃত্যুর গান গেয়েছিল, সে এখন যোগ দিয়েছে তার শোকগ্রস্তদের সাথে – তার বিদায় ছিল তার কথার মতোই মহৎ”। কথাটি ফিলিস্তিনের প্রতিভাবান শিশুশিল্পী হাসান আলা আয়াদের মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন গাজার সাংবাদিক মাহমুদ বাসাম।
৫ মে সোমবার গাজা উপত্যকার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনির মধ্যে মারা যায় ১৪ বছর বয়সী লড়াকু শিশুশিল্পী হাসান আলা আয়াদ।https://x.com/Mahmoud_Bassam8/status/1919491676785279232
হাসানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা রশিদ মাশারাওয়ি। তিনি বলেন, “হাসান আয়াদ, যে আমাকে গাজা থেকে গান উৎসর্গ করেছিল, সে আজ শহীদ হয়েছে। তার কণ্ঠে যে শিশুসুলভ ব্যথা ছিল, তা আমার চলচ্চিত্র ‘জিরো ডিসটেন্স’-এ অমর হয়ে থাকবে’।
হাসানের প্রতিটি গানে ছিল গাজার দীর্ঘদিনের অন্যায়ের গল্প, দুঃখের চিত্র। তবু সেই গানগুলো মানুষকে ভয় পেরিয়ে সাহসী হতে শেখাত। সে ছিল কেবল একজন শিল্পী নয়, একটি প্রতিবাদের প্রতীক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে যে আয়াদ ভয়ার্ত কণ্ঠে গান গাইছেন,
“যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে আমরা মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেছি,
স্থল ও সমুদ্র থেকে বিমান হামলা। তারা ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে – মানুষ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে,
সাক্ষী থাকো, বিশ্ব, তারা যা করেছে – তারা ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে,
যখন আরবরা শান্তিতে ঘুমাচ্ছে…”
এই গানে মাঝে মাঝে তার বাবা আলা আয়াদও যোগ দিচ্চিলেন। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার বাবা। তিনি বলেন, “হাসান ছিল আমার উষ্ণতা, আমার আত্মা, আমার ছেলে… আমার একমাত্র ছেলে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে যে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ১৬,২৭৮ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতি ৪০ মিনিটে একজন শিশু মারা যাচ্ছে ফিলিস্তিনে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা ৫৭ জন শিশুর রেকর্ড করেছে যারা গাজায় ইসরায়েলের “সম্পূর্ণ অবরোধ”-এর মধ্যে অপুষ্টিতে মারা গেছে।