নব্বইয়ের দশকে অভিষেক করে যে নায়ক প্রাণসঞ্চার করেছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে, তিনি হলেন সালমান শাহ। রূপালি পর্দায় ধরা দিয়েই তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন রাতারাতি, হয়ে উঠেছিলেন কোটি তরুণ-তরুণীর স্বপ্নের নায়ক, রচনা করেছিলেন ইতিহাস। অনেকেই বলে থাকেন সালমান শাহ’র মত এতো জনপ্রিয় নায়ক হয়তো আর কখনোই কোনোদিন জন্মাবে না এই ইন্ডাস্ট্রিতে।
আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলা সিনেমার অমর এ নায়কের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী। বেঁচে থাকলে আজ তিনি পা রাখতেন ৫৪ বছরে। তবে লাখো ভক্তদের কাঁদিয়ে ১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণের মাসেই, অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর ওপারে পাড়ি জমান এই ক্ষণজন্মা অভিনেতা।
নানান চরিত্র, নানান কাহিনী নিয়ে সালমান শাহ বারবার যেমন হাজির হতেন পর্দায়, মৃত্যুর পরও তিনি রেখে গেছেন অমীমাংসিত এক কাহিনী। এ কাহিনী রহস্যের, এ কাহিনী অমর নায়কের মৃত্যুরহস্য নিয়ে!
সালমান শাহ কি আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর আজও মেলানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে সালমানের মৃত্যুবার্ষিকী বা জন্মদিন এলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভক্তদের তৈরি ‘সালমান শাহ ফ্যান ক্লাব’ হতে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এবছরও এর ব্যতিক্রম নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাকে স্মরণ করে ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের পোস্ট।
সালমান শাহ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় তার জন্ম। এই নায়ককে সবাই সালমান শাহ হিসেবে চিনলেও, তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবার নাম হলো কমর উদ্দিন চৌধুরী, আর মা নীলা চৌধুরী। সালমানের দাদাবাড়ি সিলেট শহরের শেখঘাটে, আর নানাবাড়ি দারিয়া পাড়ায়। নানাবাড়িতেই জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছিল সালমানের। তাই সেই বাড়িটি এখন ‘সালমান শাহ হাউস’ নামে পরিচিত।
বলা বাহুল্য, সালমানের নানা অভিনয় করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এ। সংস্কৃতিমনা নানার উৎসাহ পেয়েই অভিনয়ে আসেন সালমান। ১৯৮৫ সালে বিটিভির ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটক দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন সালমান। এরপর অভিনয় করেন ‘দেয়াল’ (১৯৮৫), ‘সব পাখি ঘরে ফিরে’ (১৯৮৫), ‘সৈকতে সারস’ (১৯৮৮), ‘নয়ন’ (১৯৯৫) ও ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ (১৯৯৬) শীর্ষক নাটকে। ১৯৯০ সালে ‘পাথর সময়’ ও ১৯৯৪ সালে ‘ইতিকথা’ নামের ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছিলেন সালমান। ১৯৮৬ সালে হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-র একটি গানে মডেলও হয়েছিলেন তিনি।
চলচ্চিত্রে সালমানের অভিষেক ঘটে ১৯৯৩ সালে নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে। সেই বছর মুক্তি পেয়েছিল তার প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। এই সিনেমাতেই পরিচালক তার নাম ইমন বাদ দিয়ে সালমান শাহ রাখেন।
এরপর অভিনেতার এই ইন্ডাস্ট্রিতে বাকি পথচলা সব সিনেপ্রেমীদেরই আছে জানা…