বলিউড অভিনেত্রী শ্বেতা বসু প্রসাদের জীবন যেন এক সিনেমার কাহিনি। শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জয়, এরপর যৌন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে যাওয়া, তারপর দৃঢ় প্রত্যাবর্তন—সব মিলিয়ে এক নাটকীয় উত্থান-পতন।
মাত্র ১১ বছর বয়সেই বিশাল ভরদ্বাজের মকড়ি (২০০২) ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সেরা শিশুশিল্পীর স্বীকৃতি পান শ্বেতা। পরের বছর ইকবাল ছবিতে খাদিজার ভূমিকায় তার অভিনয়ও দারুণ প্রশংসিত হয়। শিশু তারকা থেকে ধীরে ধীরে টেলিভিশন ও দক্ষিণি ছবিতেও জায়গা করে নেন তিনি। ‘কোথা বঙ্গারু লোকাম’ সিনেমাটি তাকে নতুন পরিচিতি এনে দেয়।
তবে ২০১৪ সালে সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায়। হায়দরাবাদের একটি পাঁচ তারকা হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় কথিত যৌনকর্মের অভিযোগে। হঠাৎ করেই সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। শোনা যায়, আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি এমন পথে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী তদন্তে প্রমাণিত হয়—শ্বেতা ভুলভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলেন এই ঘটনায়। মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ার পর আদালত সব অভিযোগ থেকে তাকে মুক্তি দেন। শ্বেতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কখনোই এমন কোনো স্বীকারোক্তি দেননি; বরং সে সময় তিনি সেখানে গিয়েছিলেন একটি পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।
ব্যক্তিজীবনেও ছিল ভাঙাগড়ার গল্প। মাত্র ২৩ বছর বয়সে দুই মাস কাটাতে হয়েছিল বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। পরে ২০১৮ সালে পরিচালক রোহিত মিত্তলকে বিয়ে করেন শ্বেতা, এক বছরের মধ্যে বিচ্ছেদও ঘটে। যদিও তিনি বলেছিলেন—আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পরও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব রয়ে গেছে।
সব প্রতিকূলতার পরও হারিয়ে যাননি শ্বেতা। মূলধারার বাইরে, ডিজিটাল মাধ্যমে নতুনভাবে খুঁজে নিয়েছেন নিজের আসন। ‘ইন্ডিয়া লকডাউন’ ও ‘ত্রিভুবন মিশ্র: সিএ টপার’–এর মতো কাজ শ্বেতা পরিণত অভিনেত্রীর পরিচয় দিয়েছে। সম্প্রতি ক্রিমিনাল জাস্টিস–এর নতুন মৌসুমে তার শক্তিশালী অভিনয় আবার মনে করিয়ে দিয়েছে লড়াইয়ে এখনো হারেননি শ্বেতা বসু প্রসাদ।