Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪

সুন্দরী প্রতিযোগিতার যাত্রায় অভিনেত্রীরা

সুন্দরী প্রতিযোগিতার যাত্রায় অভিনেত্রীরা । ছবি: গুগল

প্রতি বছরই হচ্ছে নিত্য নতুন সুন্দরী প্রতিযোগিতা। নানা নামে, নানা পরিচয়ে। সেই প্রতিযোগিতা থেকে বিদেশে বাংলাদেশকে উপস্থাপনও করে বাংলাদেশের মেয়েরা।

কিন্তু এই প্রতিযোগিতা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। যত দিন যাচ্ছে তত বেড়ে চলছে প্রতিযোগিতা- সমান তালে বাড়ছে সমালোচনাও।

এক প্রতিযোগিতায় বিচারক প্রশ্ন করেছিলেন, এইচ টু ও মানে কী? প্রতিযোগী উত্তর দিলেন- এই নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে! আর তা নিয়ে শুরু হলো ট্রল। এমনটাই ঘটে গেছে সুন্দরী প্রতিযোগিতার মঞ্চে। মনে আছে কি?

প্রশ্ন যাই হোক- উত্তরে , ‘নারীদের জন্য কাজ করবো- সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে কাজ করবো’ এমনই উত্তর পাওয়া যায়, যা কিনা ‘পপুলার’ উত্তর বলা যেতে পারে।

আবার এক প্রতিযোগীর নাম ঘোষণার পর তা বাতিল করে আরেকজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা তো রীতিমত শিরোনামে পরিণত হয়। পুনরায় ঘোষিত বিজয়ী জেসিয়া ইসলামকে এখন কাজ করতে দেখা গেলেও, জান্নাতুল নাইম এভ্রিল – অর্থ্যাৎ যার মুকুট কেড়ে নেওয়া হয়েছিল- তাকে আর এখন তেমন মিডিয়ায় কাজ করতে দেখা যায় না।

অথচ একটা সময় সুন্দরী প্রতিযোগিতা দিয়ে মিডিয়াতে কাজ শুরু করা অভিনেত্রীদের অনেকেই নাম – যশ ও খ্যাতি কামিয়েছেন।

আর সেই যাত্রায় সবার আগে স্মরণ করতেই হয়, আনন্দ বিচিত্রার নাম।

প্রয়াত সাংবাদিক শাহাদাৎ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ৯০-এর দশকে বাংলাদেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ম্যাগাজিনটির ফ্ল্যাগশিপ প্রতিযোগিতা হয়ে উঠে এই আয়োজন ধীরে ধীরে। নাম হয় ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো সুন্দরী’ প্রতিযোগিতা।

সারা বাংলাদেশ থেকে নির্দিষ্ট বয়স সীমার মাঝে আগ্রহীদের ছবি আহ্বার করা হতো। প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের পর পত্রিকার ফটোগ্রাফার গিয়ে ছবি তুলে আনতেন। এরপর আবার বিচারকরা নির্বাচন করতেন প্রথম দশজনকে। আবার ছিল পাঠকের ভোটে সেই দশের মাঝেই নতুন দশের আবির্ভাব।

আনন্দ বিচিত্রার ফটো সুন্দরীদের মাঝে সবার আগে নাম আসে আরিফা জামান মৌসুমীর নাম। তবে অনেকই জানেন না, মৌসুমী হয়েছিলেন, বিচারকদের বিচারে দ্বিতীয়। তবে পাঠকে ভোটে হন তিনি সেরা। আর এরপর সুপারস্টার।

১৯৯২ সালে এ আয়োজনে চতুর্থ ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় পাঠকের ভোটে ‘সেরা সুন্দরী’ হয়েছিলেন মৌসুমী। ফারহানা আজাদ ছন্দা নামে একজন আনন্দ বিচিত্রার বিচারে প্রথম স্থানে ছিল এবং তার প্রাপ্ত পয়েন্ট ছিল ৫৫৮০ কিন্তু পাঠকদের রায়ে মৌসুমী তার চেয়ে এগিয়ে পায় ৭২২০ পয়েন্ট।

আনন্দ বিচিত্রার এই প্রতিযোগিতা দিয়ে অনেকে উঠে এসেছেন ফোকাসে। যেমন চিত্রনায়িকা পপি, রত্না, রথিসহ আরও অনেকে। কেউ মিডিয়াতে থিতু হয়েছেন, কেউ আবার নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

একটা সময় আনন্দ বিচিত্রা ভাগ হয়ে আনন্দ ধারা ও বিনোদন বিচিত্রা নামে দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। আনন্দ ধারা ‘আনন্দ ধারা মিস ফটোজেনিক’ নামে যাত্রা অব্যাহত রাখে। আর বিনোদন বিচিত্রা ‘ফটোসুন্দরী’ নাম দিয়ে এগিয়ে যায়।

এর মাঝেই লাক্স ব্র্যান্ডটি এসে যুক্ত হয় আনন্দ বিচিত্রা ও পরবর্তীকালে আনন্দ ধারার সাথে। ১৯৯৫ সালে ওই প্রতিযোগিতার নাম হয় ‘লাক্স-আনন্দ বিচিত্রা ফটো সুন্দরী’৷ ১ম ‘লাক্স আনন্দবিচিত্রা ফটোসুন্দরী ১৯৯৫‘ নির্বাচিত হন সাদিকা পারভীন পপি।

আনন্দ ধারার যাত্রায় অপি করিমে মত তারকাকে খুঁজে পায় মিডিয়া। ‘১ম লাক্স আনন্দধারা মিস ফটোজেনিক ১৯৯৯‘নির্বাচিত হন অপি করিম। আর সে সেময় তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন পপি, লিগেসি থাকে চলমান থাকে।

একে একে মিডিয়াতে সংযুক্ত হন কুসুম শিকদার, শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি, মিলা হোসেনসহ তারকা মুখ। একটা সময়, এটাই যেন ছিল প্রাথমিক অডিশন মিডিয়াতে প্রবেশ করার। এমন কী অনেকটা প্রতিষ্ঠিত তারকাও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খেতাব জয় করেছেন। যেমন, সাদিয়া ইসলাম মো, রিয়া, মোনালিসা- প্রমুখ।

এরপর পত্রিকার পাতা থেকে চ্যানেলে ঠাঁই পায় সুন্দরী প্রতিযোগিতা। লাক্স-চ্যানেল আই সুপার স্টার- প্রতিযোগিতা নামে ২০০৫ সালে নতুন করে যাত্রা শুরু করে সুন্দরী প্রতিযোগিতা।

প্রথম লাক্স সুন্দরী হন শানারৈ দেবী শানু৷ তারপর যারা লাক্স সুন্দরী হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন: জাকিয়া বারী মম, বিদ্যা সিনহা সাহা মীম, ইসরাত জাহান চৈতি, মেহজাবিন চৌধুরী, মাহবুবা ইসলাম রাখি, সামিয়া সাঈদ, নাদিয়া আফরিন, আফসান আরা বিন্দু, আজমেরি হক বাঁধন, মুনমুনসহ অগণিতমুখ।

এছাড়াও আরও কিছু প্লাটফর্ম উঠে আসে সে সময়ে। ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল, এটিএন-এর ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ আর মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর মধ্যে সুপার হিরো সুপার হিরোইন প্রথম বছরের পরই বন্ধ হয়ে যায়। একুশে টিভির ‘মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’নিয়েও পরে আর খবর জানা যায়নি।

এরপর কালের স্রোতে বয়ে গেছে জল। সুন্দরী প্রতিযোগিতা যেমন সমালোচিত হয়েছে, সুনামও বয়ে এনেছে।

বাংলাদেশ থেকে ১৯৯৪ সালে প্রথম বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন আনিকা তাহের। এরপর ইয়াসমিন বিলকিস সাথী (১৯৯৫), রেহনুমা দিলরুবা চিত্রা (১৯৯৬), শায়লা সিমি (১৯৯৮), তানিয়া রহমান তন্বী (১৯৯৯), সোনিয়া গাজী (২০০০) ও তাবাসসুম ফেরদৌস শাওন (২০০১)। ২০১৪ সালে ‘মিস আয়ারল্যান্ড হয়েছেন বাংলাদেশের মেয়ে মাকসুদা প্রিয়তি৷ ৭০০ প্রতিযোগীকে হারিয়ে ‘মিস আয়ারল্যান্ড’ নির্বাচিত হন৷ একই সঙ্গে তিনি পেয়েছেন ‘সুপার মডেল’ ও ‘মিস ফটোজেনিক’ খেতাব।

ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা, রাফাহ্ নানজিবা তোরসা, এর আগে জান্নাতুল পিয়া- সকলেই বাংলাদেশকে সম্মানের সাথেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরেছেন।

একটা সময় যেমনটি এই প্ল্যাটফর্ম মানেই ছিল তারকা হওয়ার প্রথম ধাপ – তেমনটাই চাচ্ছেন মিডিয়া মিডিয়া সংশ্লিষ্ট সকলেই। কারণ অনিয়ম হলে, দায়ও মিডিয়ার উপরেই বর্তায় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২৪ সালেই একটি আয়োজন থেকেই জানানো হয়েছে দশ দেশে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন দশ সুন্দরী। আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প থেকে নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে পুরুষ ও নারী- উভয় ক্যাটাগরির প্রতিযোগীদের।

তবে আর শুধু অংশগ্রহণ নয়, অর্জনের অপেক্ষায় আছে এখন গোটা বাংলাদেশ। যে কারো হাত ধরেই বাংলাদেশের মুকুটে যুক্ত হোক অর্জনের পালক। আর কিছু নয়।

লেখা: সৈয়দা ফারজানা জামান রুম্পা

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

সপ্তমীতে মিমের সাজ

১১ অক্টোবর অষ্টমী বটে, কিন্তু আলোচনা এখনো সপ্তমীতে চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমের সাজ নিয়ে। ১০ অক্টোবর ছিল…

প্রথম শিক্ষিত ‘কাপুর’

বলিউডের বিখ্যাত কাপুর বংশের প্রথম শিক্ষিত কাপুর বলা হয় রণবীর কাপুরকে। এ নিয়ে তারা নিজেরাই ঠাট্টা করেন। রাজ…

অমিতাভের চোখে রতন টাটা 

৯ অক্টোবর পৃথিবীকে চিরবিদায় জানিয়েছেন ভারতের অন্যতম শিল্পপতি রতন টাটা। অত্যন্ত ধনী এবং ক্ষমতাশালী হওয়ার পরেও…
Exit mobile version