Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
Chitralee will take you closer to the world of entertainment.
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫

সাবিনা ইয়াসমিনের প্রথম গানই জাতীয় সংগীত

সাবিনা ইয়াসমিনের প্রথম গানই জাতীয় সংগীত

সাবিনা ইয়াসমিনের প্রথম গানই জাতীয় সংগীত : ইতিহাস আর এক শিল্পীর শুরু

বাংলা গান শুনলেই সাবিনা ইয়াসমিনের নাম চলে আসে। তিনি কেবল জনপ্রিয় নন, আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, সাবিনা ইয়াসমিনের প্রথম গানই জাতীয় সংগীত হয় । জানুন কীভাবে এই গান তার ক্যারিয়ার ও বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সূচনা তৈরি করেছিল।

“আমার সোনার বাংলা” দিয়ে শুরু

১৯৬০ দশকের শেষভাগে, যখন পাকিস্তানে রবীন্দ্রসংগীতের ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছিল, তখন জহির রায়হানের “জীবন থেকে নেয়া” ছবিতে ব্যবহার করা হয় রবীন্দ্রনাথের গান “আমার সোনার বাংলা”। গানটি গাওয়া হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে। সেই কণ্ঠের ভেতরেই ছিলেন এক তরুণী—সাবিনা ইয়াসমিন।

তখন হয়তো তিনিই ভাবতে পারেননি, তার প্রথম রেকর্ডিংটাই ইতিহাসে জাতীয় সংগীত হিসেবে জায়গা করে নেবে।

মুক্তিযুদ্ধের দিনে জাতীয় সংগীতে রূপান্তর

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথমবার জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিবেশিত হয়। সেদিন থেকে গানটি আর শুধু রবীন্দ্রসংগীত নয়—এটা হয়ে ওঠে এক জাতির পরিচয়।
পরের বছর, ১৯৭২ সালে, স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়—গানের প্রথম দশ চরণই জাতীয় সংগীত হবে।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে

প্লেব্যাকের প্রথম অভিজ্ঞতা

তবে সাবিনা ইয়াসমিনের প্লেব্যাক অভিষেক ছিল অন্য একটি ছবিতে—“আগুন নিয়ে খেলা” (১৯৬৭)। ছবির সংগীত পরিচালনা করেছিলেন আলতাফ মাহমুদ।

Photo Credit : Google

সাবিনা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, প্রথম গান গাওয়ার পর দেড় মাস কোনো খবর পাননি। তিনি ভাবছিলেন গানটা ঠিকভাবে হলো কি না। হঠাৎ একদিন আলতাফ মাহমুদ এসে বললেন, “আরেকটা গান গাইতে হবে। জহির রায়হান তোমার গলা খুব পছন্দ করেছেন।” সেই মুহূর্তটাকে সাবিনা নিজের জীবনের বড় পাওয়া হিসেবে মনে করেন।

ইতিহাসের ভেতর দিয়ে এক শিল্পীর যাত্রা

ভাবা যায়? একজন শিল্পীর প্রথম রেকর্ডিং—যা তিনি ভেবেছিলেন কেবল একটি ছবির গান—কিছুদিন পরই একটি জাতির জাতীয় সংগীতে পরিণত হলো। আবার তার প্রথম প্লেব্যাকও হয়েছিল এমন একজনের তত্ত্বাবধানে, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ সংগীতজ্ঞ হিসেবে পরিচিত—আলতাফ মাহমুদ।

অতএব, সাবিনা ইয়াসমিনের শুরুটা নিছক গান নয়, ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা এক বিশেষ যাত্রা।

কেন এই কাহিনি এখনো গুরুত্বপূর্ণ

  • জাতীয় সংগীত হিসেবে তার কণ্ঠ চিরস্থায়ীভাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।
  • আলতাফ মাহমুদের মতো সংগীত ব্যক্তিত্বের হাত ধরে শুরু—যা পরবর্তীতে তাকে দেশের সবচেয়ে বড় শিল্পীদের একজন বানিয়েছে।
  • বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ আর স্বাধীনতার গল্পে তার প্রথম গানও একটি প্রতীক হয়ে আছে।

শেষকথা

আজ আমরা যখন জাতীয় সংগীত গাই, তখন হয়তো মনে থাকে না, এর ভেতরেই এক তরুণী শিল্পীর প্রথম গান লুকিয়ে আছে। কিন্তু সেই গানের ভেতর দিয়েই শুরু হয়েছিল এক কিংবদন্তির যাত্রা—যিনি পরবর্তীতে বাংলাদেশের সংগীত জগতের এক অনন্য নাম হয়ে উঠেছেন—সাবিনা ইয়াসমিন

Share this article
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next

সিনেমায় নিজ কণ্ঠেও গান গেয়েছেন সালমান শাহ

সিনেমায় নিজ কণ্ঠেও গান গেয়েছেন সালমান শাহ আজ (৬ সেপ্টেম্বর) ঢালিউডের অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী।…

‘বিবৃতি চাই না- মব সামলা’ সরকারকে নির্মাতা নিপুন

‘বিবৃতি চাই না- মব সামলা’ সরকারকে নির্মাতা নিপুন দেশের আলোচিত নির্মাতা আশফাক নিপুন আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে…

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ বিশ্বজুড়ে যখন গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন নিয়ে…

কলকাতায় পুরস্কার পেলেন চঞ্চল চৌধুরী

কলকাতায় পুরস্কার পেলেন চঞ্চল চৌধুরী ওপার বাংলার টালিউডে বেশি কাজ না করলেও জনপ্রিয়তা এবং প্রতিভার কারণে চঞ্চল…
Exit mobile version