বাংলা চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান দুলু ওরফে ফারুক। যিনি আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে, ২০২৩ সালের ১৫ মে চিরবিদায় জানিয়েছিলেন পৃথিবীকে। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর এদিন তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ফারুক জন্মেছিলেন ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট। তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।
স্কুলজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া, অতঃপর ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন ফারুক। এসময় তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হাতে অস্ত্র চুলে নেন তিনি। ছাত্রজীবনে ফারুক অভিনয় করতেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাড়া-মহল্লায় নাটকে।
১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমার জগতে আগমন ঘটে তার। যেখানে তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন কবরী। এরপর আর থেমে থাকেননি তিনি। ফারুক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সুজন সখী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’ ইত্যাদি। জীবিত অবস্থায় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
আকবর হোসেন পাঠান দুলুর নাম ফারুক হওয়ার পিছনে আছেন তিনজন। অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান, পরিচালক এইচ আকবর এবং ফারুক নামে এক বন্ধু- এই তিনজন মিলে দুলুর নাম দিয়েছিলেন ফারুক। ভক্ত ও অনুরাগীদের কাছে তিনি ‘ফারুক’ নামেই পরিচিতি লাভ করেন।
অভিনয় ও রাজনীতি ছাড়াও পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত ফারুক। আর চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে তিনি হলেন সবার প্রিয় ‘মিঞা ভাই’।
ফারুকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে নানাভাবে স্মরণ করছেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা। যদিও অভিনেতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দিনটিতে ঘটা করে কোনও আয়োজন করেননি তারা। তবে এ দিন ভোরে পরিবারের সদস্যরা গাজীপুরে তার কবর জিয়ারত করেন। এছাড়া সেখানেও দোয়া ও এতিম-অসহায়দের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়।