সাদি মোহাম্মদ ও শিবলী মোহাম্মাদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা গেছেন।
তার পুত্র সাদি মোহাম্মদ গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শারিরীক নানা জটিলতা দেখা দেওয়ায় মৃত্যুর চারদিন আগে জেবুন্নেছাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কণ্ঠশিল্পী আরও জানান, ৯ জুলাই বাদ আসর মোহাম্মদপুর কবরস্থানে তার মায়ের জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
মৃত্যুর সময় জেবুন্নেছার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
২০২৩ সালের মার্চে একটি সাক্ষাৎকারে সাদি মেহাম্মদ বলেছিলেন, “সবাই কেবল আমার বাবার কথা জানতে চায়। কিন্তু আমার মায়ের কথা কেউ জানতে চায় না। ৯৬ বছর বয়সে এখনও আমার মা বেঁচে আছেন সেই ভয়াল স্মৃতি বুকে নিয়ে।”
সেই স্মৃতি নিয়েই চলে গেলেন জেবুন্নেছা।
তিনি ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম শহীদ, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা সলিমউল্লাহর স্ত্রী।
মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে অবস্থিত তাদের সি-১২-১০ বাসাটিতে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ জেবুন্নেছার সেলাই করা বাংলাদেশের পতাকা উড়ান তার স্বামী সলিমউল্লাহ।
২৬ মার্চ অবাঙালিরা একটি গুজবের রেশ ধরে মোহাম্মদপুরের বাড়িটিতে হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলাতে শহীদ হন সলিমউল্লাহ। সে সময় তার সাথে ছিলেন সাদি মোহাম্মদ। কোনও মতে পালাতে সক্ষম হন সাদি।
বাড়িতে আগুন লাগানোর পর সন্তানদের রক্ষা করতে তিনি বাড়িটির ছাদ থেকে লাফ দেন জেবুন্নেছা। সেদিন থেকে তার দুটো পা ভেঙে অকেজো হয়ে যায়। ঘটনার পর দীর্ঘ সময় ধরে ক্র্যাচে ভর করে এবং জীবনের শেষ ১৫ বছর হুইলচেয়ারে বসে জীবন কাটান তিনি। কিংবদন্তি শিল্পী সাদি ও শিবলী মোহাম্মদসহ ১০ সন্তানকে একাই সেলাই করে মানুষ করেছেন জেবুন্নেছা।
জেবুন্নেছাকে নিয়ে সাদি ও শিবলী মোহাম্মদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের বক্তব্য মিডিয়াতে দিয়েছেন, জানিয়েছেন মায়ের অবদানের কথা।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদপুরের শহীদ সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ শিবলী মোহাম্মদ ও সাদি মোহাম্মদের বাবার সম্মানে নামকরণ করা হয়।