-মোঃ অলিউর রহমান-
মাত্র একটি ভোটের কারণে অস্কার পায়নি ‘মাদার ইন্ডিয়া’! সত্যি কি তাই?
তাহলে ঘটনাটা জানা যাক।
অস্কার বিশ্বের যেকোনো চলচ্চিত্র নির্মাতার জীবনের একটি বড় স্বপ্ন। ২০২৩ সালে ‘নাটু নাটু’র জন্য অস্কার জেতার গৌরব অর্জন করে ভারত। দেশটিতে এজন্য আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। অনেকেরই হয়ত জানা নেই ৯৫তম আসরে নয় বরং ৩০তম আসরেই ভারত ঘরে অস্কার তুলতে পারত!
কিন্তু কেন ভারত সেই বছর অস্কার পেল না? প্রশ্নটির উত্তর নিয়েই পাঠকদের কাছে হাজির হয়েছে চিত্রালী।
সালটা ১৯৫৭। ভারতে মুক্তি পেয়েছে মেহবুব খান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মাদার ইন্ডিয়া’। ছবিটি সেই সময়ে ভারতের বক্স অফিসে দাপটের সাথে রাজত্ব করছে।
ছবিটির জন্য মুখ্য অভিনেত্রী নার্গিসকে তখন ১১তম কার্লোভি ভ্যারি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে দেওয়া হয়েছে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।
নার্গিসের ঝুলিতে আন্তর্জাতিক আসর থেকে পুরস্কার আসার পরই নির্মাতাদের আশা অনেক বেড়ে যায়। তারা মুখিয়ে থাকেন অস্কারের অপেক্ষায়। সবাই ভেবেই নিয়েছিলেন প্রথমবার ছবি জমা দিয়েই ভারত ঐ বছর ঘরে অস্কার তুলে নিবে।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! মাত্র এক ভোটের কারণে ছবিটি ঐ বছর অস্কার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
ছবিটির মূল চরিত্র রাধা কেন মহাজনকে বিয়ে করে দুঃখের জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়নি তা আমেরিকান ভোটাররা বুঝে উঠতে পারেনি।
সত্যি বলতে কি এস এস রাজমৌলি তার ‘আরআরআর’ সিনেমার প্রচারণার জন্য আমেরিকাতে যতটা দৌড়াদৌড়ি করেছেন, ততটা করা সম্ভব ছিল না মেহবুব খানের পক্ষে।
ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্র রাধা যে সমগ্র ভারতীয় নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে, আর ভারতীয় নারীরা যে তাদের স্বামীর প্রতি অনেক নিবেদিত থাকেন, তা বোঝানোর জন্য আমেরিকাতে যথেষ্ট প্রচারণা চালানো হয়নি তখন।
আর তাই সেই বছর এক ভোট বেশি পাওয়ার কারণে ইতালির পরিচালক ফেদেরিকো ফেল্লিনির ‘লে নত্তি দি কাবিরিয়া’ পেয়ে যায় বিদেশি ভাষায় নির্মিত সেরা চলচ্চিত্রের অস্কার।
খবরটি খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল সবার জন্য। এমনকি পরিচালক মেহবুব খান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি এতটাই মর্মাহত হয়েছিলেন যে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন তিনি।
অস্কার না পেলেও সিনেমা বোদ্ধাদের কাছে একটি কালজয়ী ছবি হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ‘মাদার ইন্ডিয়া’।