কালজয়ী বাঙালী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। প্রথমবার কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হলো এই নির্মাতার আরেক কালজয়ী সিনেমা ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। সিনেমাটি ১৯৭০ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
গত শতকের এই ধুলো পড়া ঝাপসা প্রিন্টকে মুক্তির ৫৫ বছর পর আবার ঝকঝকে করে তোলা হয়েছে। ফোর-কে ভার্সনে রিস্টোরেশন করা হয়েছে অরণ্যের দিনরাত্রি। কান উৎসবের ক্ল্যাসিকস বিভাগে ১৯ মে পুনরুদ্ধার করা সেই সংস্করণ দর্শক উপভোগ করলেন প্রথমবারের মতো।
১৯ মে প্যারিসের বুনুয়েল থিয়েটারে বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার দিকে প্রদর্শিত হয় অরণ্যের দিনরাত্রি। স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে হাজির ছিলেন সিনেমার দুই অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর ও সিমি গারেওয়াল। রেড কার্পেটে জমকালো সবুজ শাড়ি ও মেয়ের ডিজাইন করা গয়নায় সেজে উঠেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। আর সিমি গারেওয়ালকে দেখা গেছে শ্বেতশুভ্র পোশাকে। অরণ্যের দিনরাত্রির এই বিশেষ প্রদর্শনী উপস্থাপন করেন সত্যজিৎ রায়ের অনুরাগী, আমেরিকান পরিচালক ওয়েস অ্যান্ডারসন। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দর্শকের সামনে তৈরি হলো এক নতুন ইতিহাস।
১৯৭০ সালে সুনীল গাঙ্গুলীর উপন্যাস অবলম্বনে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ মুক্তি পেয়েছিল। মূল কাহিনিকে কিছুটা নিজের মতো করে সিনেমা করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। নগরে বাস করা চার যুবকের মনের ভিতরে ঘাপটি সবুজপ্রবাহের গল্প সিনেমাটি। চার যুবক পালামৌয়ের জঙ্গলে কি যেন খুঁজছিল। কিছু প্রশ্ন আর স্নিগ্ধতা হয়তো।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ আর শমিত ভঞ্জের বিপরীতে সেই স্নিগ্ধতারই তিনটি রূপ যেন তুলে ধরেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর, কাবেরী বসু এবং সিমি গারেওয়াল। এই ছবি ২০তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের জন্য গোল্ডেন বিয়ারের পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিল।
এ ছবি তৈরি হয়েছিল প্রিয়া ফিল্মসের অসীম দত্ত, নেপাল দত্তের প্রযোজনায়। তাই এ ছবির প্রিন্ট সংরক্ষিত ছিল প্রিয়ার পক্ষে পূর্ণিমা দত্তের কাছেই। ওয়েস অ্যান্ডারসন এবং সন্দীপ রায়ের উদ্যোগে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, জানুস ফিল্মস, দ্য ক্রাইটেরিয়ন কালেকশনের সহযোগিতায় ল ইম্যাজিন রিট্রোভাটা-তে দ্য ফিল্ম ফাউন্ডেশনের ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট-এ ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আর্থিক ভার বহন করেছে গোল্ডেন গ্লোব ফাউন্ডেশন।