এক দশকের বেশি সময় পর ১০ আগস্ট খুলে দেয়া হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ‘ছবির হাট’। এর মাধ্যমেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর উত্তাল শাহবাগ এলাকা জমে উঠলো আড্ডা, গান ও কনসার্টে।
ঢাকার শাহবাগ থানা হেফাজতে থাকা পরিত্যাক্ত গাড়িগুলো দিয়েই ছবির হাটের মঞ্চের ‘ব্যাকড্রপ’ বানানো হয়। আর উপর থেকে ঝোলানো হয় লম্বা সাদা ব্যানার। ঐ ব্যানারে লেখা হয় ‘আওয়াজ উডা, কথা ক’- ছবির হাট।
এদিন রাত পর্যন্ত চলা গানের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রতি আলোচনার শীর্ষে উঠে আসা র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল। ‘আওয়াজ উডা’ শীর্ষক গান গেয়ে তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। পরবর্তীতে এ গানের জন্যই তাকে গ্রেপ্তারের পর পাঠানো হয়েছিল রিমান্ডে ও কারাগারে।
গণআন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর মুক্তি পান হান্নান। যে গান গেয়ে গ্রেপ্তার হওয়া, সেই গানের প্রতিবাদী সুরেই এ র্যাপার মাতিয়ে রাখেন ১০ আগস্টের ‘ছবির হাট’। কনসার্টে হান্নান বলেন, ‘আপনারা আমার লাইগা যা করছেন, আমি কৃতজ্ঞ।’
হান্নান ছাড়াও অন্যান্য শিল্পীরা এই আয়োজনে গানে গানে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার বার্তা দিয়েছেন। হোসাইন জীবন ও শান্তর কণ্ঠে র্যাপ গান দিয়ে বিকাল ৫টার দিকে ছবির হাটে কনসার্ট শুরু হয়। ‘শিল্পে আবার সেন্সর কী?, স্টপ ফিল্ম সেন্সরশিপ’- লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে কয়েকজনকে দেখা যায় মঞ্চে দাঁড়াতে। কনসার্টের আয়োজনটি চলে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, ‘ছবির হাট’ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের খোলা অংশে মোল্লার দোকানকে ঘিরে গড়ে উঠে চারুকলার ছাত্রছাত্রী ও শিল্পপ্রেমী মানুষের আড্ডার আয়োজন। ২০০৩ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিল্পপ্রেমী সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত হতো ছবির হাট। খোলা আকাশের নিচে সুবিধামতো স্থানে সকল মাধ্যমের শিল্পীরা তাদের নিজস্ব শিল্পকর্ম উপস্থাপনের মাধ্যমে গড়ে তুলতেন এক আনন্দময় আড্ডার পরিবেশ। ঢাকাবাসী এমন পরিবেশ অনেক বছর পর উপভোগ করলেন।